প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ‘দিল্লির কসাই’ নামে কুখ্যাত অপরাধী চন্দ্রকান্ত ঝা। অবশেষে তাকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে পলাতক ছিল কুখ্যাত এই সিরিয়াল কিলার। গত ১৭ জনুয়ারি অর্থাৎ গত শুক্রবার পুরনো দিল্লি রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: খুনের পর মৃতের পিঠে লেখা ‘ধোকেবাজ’! ১৮ মাসে ১১ পুরুষকে খুন সিরিয়াল কিলারের
তিনটি খুনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল ঝা। ২০১৩ সালে তাকে তিনটি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। পরে ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্যারোলে মুক্তি পায়। কিন্তু, প্যারোলের সময় শেষ হওয়ার পরেও আর সে জেলে ফিরে যায়নি। জেলে গিয়ে আত্মসমর্পণ করার পরিবর্তে সে পালিয়ে যায়। এরপর তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করে দেয় দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সঞ্জয় সাইনে জানান, ইন্সপেক্টর মহিপাল সিংয়ের নেতৃত্বে একটি দল ঝাকে খুঁজে বের করতে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। দলটি প্রচুর কল ডিটেইল রেকর্ড বিশ্লেষণ করে। ঝায়ের আগের অপরাধের স্থানে পুনরায় তদন্ত করে। তার পরিবারের সদস্যদের এবং পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। দিল্লি পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালে ঝা প্রথমবার পুলিশের নজরে আসে। সেই বছর দিল্লির আদর্শ নগরে মঙ্গল ওরফে ঔরঙ্গজেব নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছিল এবং তার দেহ টুকরো টুকরো করে শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশের মতে, ঝাকে তার প্রথম হত্যার কয়েক মাস পর গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০২ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে মুক্তির পর সে আবার হত্যা শুরু করেছিল। তারপর থেকে একের পর এক হত্যা চালিয়ে যায়। বিহার থেকে আসা একজন পরিযায়ী শ্রমিককে গাঁজা ধূমপানের জন্য হত্যা করেছিল। এখনও পর্যন্ত ঝা ১৮ জনকে হত্যা করেছে। কার্যত সেই সময় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল দিল্লিতে।
পুলিশ জানায়, ঝা মূলত যুবকদের টার্গেট করত। মূলত উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে দিল্লিতে কাজের সন্ধানে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের সে টার্গেট করত। সে প্রথমে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করত। এরপর তাদের খাবার ও আশ্রয় দেওয়ার পর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করত। আর তারপরেই তাদের দেহ টুকরো টুকরো করে দিল্লির বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিত। ঝাকে গ্রেফতার করার জন্য দিল্লি পুলিশের ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। পুলিশ এখন পলাতক থাকাকালীন ঝায়ের কার্যকলাপের তদন্ত করছে। সম্ভবত তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অপরাধের অভিযোগ আনার সম্ভাবনা রয়েছে।