সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ফোনে বন্ধুর সঙ্গে আলোচনার জেরে মুম্বইয়ে বিপাকে পড়লেন কবি ও আন্দোলনকারী বাপ্পাদিত্য সরকার। পুলিশ ডেকে তাঁকে গ্রেফতার করানোর চেষ্টা করলেন উবরচালক।
বুধবার রাত ১০.৩০ নাগাদ মুম্বইয়ের জুহু থেকে কুরলা যাওয়ার জন্য ক্যাব ভাড়া করেন বাপ্পাদিত্য। যাত্রাপথে ফোনে এক বন্ধুর সঙ্গে তিনি দিল্লির শাহিনবাগ আন্দোলন এবং ‘লাল সেলাম’ স্লোগান নিয়ে কিছু মানুষের অস্বস্তি সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন।
যাত্রীর ফোনালাপ কানে যেতেই মেজাজ চড়ে ক্যাবচালকের। এটিএম থেকে টাকা তোলার অছিলায় রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে পুলিশ ডেকে এনে সওয়ারিকে গ্রেফতার করতে অনুরোধ জানান চালক।
আরও পড়ুন: ভাগ্য ভাল আর কিছু করেনি, CAA বিরোধী বিক্ষোভকারী তরুণীকে আক্রমণ দিলীপের
বৃহস্পতিবার টুইটারে এই ঘটনা সম্পর্কে সবিস্তারে জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া প্রোগ্রেসিভ উওমেনস অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদক কবিতা কৃষ্ণান। তিনি জানিয়েছেন, সঙ্গে কেন ডাফলি (বাদ্যযন্ত্র) রেখেছেন, বাপ্পাদিত্যর কাছে জানতে চান ক্যাবচালকের ডাকে সাড়া দেওয়া দুই পুলিশকর্মী।
বাপ্পাদিত্য তাঁদের জানান, তিনি জয়পুরের বাসিন্দা এবং মুম্বই বাগে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদসভায় অংশগ্রহণ করতে মুম্বই এসেছিলেন। সারাদিন তিনি প্রতিবাদসভায় কেন্দ্র-বিরোধী স্লোগান দিয়েছেন বলেও পুলিশকে জানান কবি।
অভিযোগ, পুলিশকর্মীদের কাছে বাপ্পাদিত্যকে গ্রেফতার করার জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকেন ক্যাবচালক। সওয়ারিকেও তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তোমাদের জন্য আমাদের দেশ ধ্বংস করবে আর আশা করবে আমরা চুপচাপ বসে তাই দেখব?’
বাপ্পাদিত্যকে থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করার সময় পুলিশ জানতে চায়, তিনি কী কী বই পড়েন। এরপর চালক ও সওয়ারি দুই তরফের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়। এর পরে বাম নেতা তথা আন্দোলনকারী এস গোভিল থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে বাপ্পাদিত্যকে ছাড়িয়ে আনেন বলে জানিয়েছেন কৃষ্ণন।
টুইটারে কৃষ্ণন আর্জি জানিয়েছেন, ‘এনপিআর, এনআরসি ও সিএএ-এর অধীনে ভীতিগ্রস্ত ভারতের ছবি এই ঘটনায় পরিষ্কার হল। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেক মানুষ অন্য কাউকে সন্দেহ করে লোকজন ডেকে এনে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবে অথবা পুলিশ এসে হেনস্থা করবে।’
তাঁর টুইট অনুসরণ করে মুম্বই পুলিশের তরফে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিষয়টি ‘উদ্বেগজনক’ বলে গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উবর ইন্ডিয়া সাপোর্ট সংস্থা।