কোভিড পর্বে ওড়িশার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। ১৪৪ কোটি টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। সম্প্রতি ওড়িশা বিধানসভায় ক্যাগের একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কোভিডের জন্য এই পরিমাণ অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১.৯৪ লক্ষ কোটির ‘হিসেব’ নেই, CAG রিপোর্টে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটটি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালের (ডিসিএইচ) জমা দেওয়া বিল থেকে দেখা গিয়েছে কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে ব্যয় করা হয়েছে সেগুলি যথাযথভাবে এবং নির্দেশিকা মেনে করা হয়নি। এর জন্য দায়িত্বে থাকা অনুমোদিত মেডিক্যাল অফিসার তায সঠিকভাবে যাচাই করেননি। প্রয়োজনীয় নথির ছাড়াও কীভাবে বিলগুলির অনুমোদন দিয়েছিলেন তার কোনও কারণ রেকর্ড করা হয়নি। এইভাবে, প্রাথমিক নথি বা রেকর্ড যাচাই না করেই বেসরকারি কোভিড হাসপাতালগুলিকে ১৪৪.৮৮ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছিল।
ক্যাগের মতে, ভুবনেশ্বর ভিত্তিক একটি বিশিষ্ট হাসপাতালের দাবি করা বিলগুলিতে অনিয়ম পাওয়া গিয়েছে। ওই হাসপাতালকে ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৮.৬৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এই ডিসিএইচ ভুবনেশ্বরে বিলগুলির একটি প্রতিলিপি জমা দেয়। সেই বিল ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি), মেডিক্যাল অফিসারের মাধ্যমে যাচাই করা হয়নি।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিএমসি ভর্তি রোগীর প্রকৃত সংখ্যা, রোগীদের কী ধরনের শয্যায় ভর্তি করা হয়েছিল? তা ঠিকমতো যাচাই না করেই অর্থপ্রদানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তারপরই এই পরিমাণ অর্থ ডিসিএইচকে প্রদান করা হয়েছিল। ক্যাগ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভুবনেশ্বরের একটি হাসপাতালে কোভিড রোগীদের সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর না করে সরাসরি আইসিইউ বা এইচডিইউ শয্যা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এই হাসপাতালের প্রায় ৩২৬ রোগীর ক্ষেত্রে সরাসরি আইসিইউ বেড বা ভেন্টিলেটর বেড থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এমনকী এক দিনের জন্যও এই ক্ষেত্রে রোগীদের অন্য কোনও হাসপাতালে রেফার করা হয়নি।
ক্যাগের রিপোর্ট শহরের আরও দুটি হাসপাতালে ২৯.২৭ কোটি এবং ১৫ কোটি টাকার অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে। এছাড়াও, আরও পাঁচটি বেসরকারি হাসপাতালে একইভাবে কোভিডের অর্থ প্রদানে অনিয়ম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আশ্বাস দিয়েছিল যে ঘটনাটির সত্যতা যাচাই করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।