এককালে আঙুল তুলেছিলেন দিল্লির দিকে। প্রসঙ্গে ছিল কানাডার বুকে খলিস্তানপন্থী নেতা নিজ্জর হত্যা মামলা। সেই জাস্টিন ট্রুডো এবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে দিলেন ইস্তফা। এই পদে ৯ বছর থাকার পর শেষমেশ গদি ছাড়তে হল ট্রুডোকে। এখানেই শেষ নয়। নিজের পার্টি লিবারাল পার্টির নেতৃত্বও ছেড়ে দিচ্ছেন ট্রুডো। এদিন এই পর পর দুই পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছেন ঘরোয়া রাজনীতিতে চাপের মুখে থাকা জাস্টিন ট্রুডো।
বেশ কিছু সময় ধরেই ট্রুডোর ওপর কানাডার রাজনীতিতে চাপ বাড়ছিল পদত্যাগের জন্য। এদিন সকালে এক রিপোর্টে ট্রুডোর পদত্যাগ নিয়ে জল্পনাও উঠে আসে। আর দিন গড়াতেই এল ট্রুডোর পদত্যাগের বার্তা। নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিয়ে, তিনি ক্রিসমাসের ছুটিতে কাটানো সময়ে ভাবনা চিন্তার কথা বলেছেন। ট্রুডো বলেন,'ছুটির মধ্যে আমি সময় পেয়েছিলাম ভাবার।' তারপর তিনি বলেন,আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা ও দলের নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করতে চাইছি..পার্টি পরবর্তীকে নেতাকে বাছার পর, গত রাতেই আমি লিবারাল পার্টির প্রেসিডেন্টকে প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছি।
উল্লেখ্য, কানাডায় ক্ষমতায় থাকা জোটের প্রধান দল লিবারেল পার্টির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সের দলনেতার পদও ছাড়ছেন তিনি। প্রসঙ্গত, দেশের মধ্যে একাধিক ইস্যুতে বহু দিন ধরেই চাপের মুখে ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা জাস্টিন ট্রুডো। দেশে বেড়ে চলা খাবারের দাম ও বাড়ির দাম, ট্রুডোর প্রতি সমালোচনার পারদ চড়া করে। এদিকে, সদ্য, ট্রুডো সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রীর সদ্য পদত্যাগের পর থেকে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের দাবিও বাড়তে থাকে।
( Dhanadhya Yog: বহু বছর পর তৈরি হয়েছে ধনাঢ্য যোগ! শুক্র, শনির কৃপায় টাকা, সমৃদ্ধির জোয়ার ৩ রাশিতে)
৫৩ বছরের জাস্টিন ট্রুডো ২০১৫ সাল থেকে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন। জিতেছেন পর পর ভোট। পর পর ২ বারের মেয়াদে তিনি সেদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। ২০১৩ সালে কানাডার পার্লামেন্টে লিবারেল পার্টি তৃতীয় স্থানে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেছিলেন ট্রুডো।
এদিকে, বেশ কিছু সমীক্ষা দাবি করছিল, আসন্ন ভোটে কানাডায় কনসারভেটিভদের কাছে হারতে পারেন লিবারালরা। তার জেরেই ট্রুডোর ওপর চাপ বাড়ছিল। এদিকে, কানাডার প্রাক্তন উপ প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের সঙ্গে ট্রুডোর সংঘাতও বেড়েছিল। সেই মর্মেও দলীয় রাজনীতিতেও কোণঠাসা হচ্ছিলেন ট্রুডো। এরই মাঝে খলিস্তানপন্থী নেতা জগমীত সিংহের দল নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থন নেওয়ায় সমীকরণ পাল্টায় কানাডার রাজনীতিতে।
এদিকে, ভারতের সঙ্গেও ট্রুডো সরকারের সম্পর্কে পতন দেখা যেতে শুরু করেছিল। কানাডার মাটিতে খলিস্তাপন্থী হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যা নিয়ে ট্রুডো সরাসরি ভারতের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। মুহূর্তে তা ওট্টাওয়া-দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্কের সমীকরণে প্রভাব ফেলে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ভ্যানকুভারে মৃত্যু হয় হরদীপ সিং নিজ্জরের। ট্রুডো অভিযোগ করেন, ওই হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের হাত ছিল।