ঐতিহাসিক ভুল শুধরোতে এবং সাম্রাজ্যবাদী পরম্পরার অবসান ঘটাতে ১০০ বছর আগে বারাণসী থেকে চুরি যাওয়া অন্নপূর্ণার মূর্তি ভারতকে ফেরৎ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ রেজিনা।
বর্তমানে এই দেবীমূর্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাককেঞ্জি আর্ট গ্যালারিতে সংগৃহীত রয়েছে। ১৯৩৬ সালে মূর্তিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট গ্যালারিতে ঠাঁই পায় নরম্যান ম্যাককেঞ্জির উদ্যোগে।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিল্পী বিদ্যা মেহরা তাঁর প্রদর্শনীর জন্য ম্যাককেঞ্জির সংগ্রহ ঘাঁটতে গিয়ে অন্নপূর্ণার মূর্তিটি দেখতে পান এবং একশো বছর আগে তা অন্যায় ভাবে ভারত থেকে নিয়ে আসা হয় জানিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
গত ১৯ নভেম্বর ভার্চুয়াল বৈঠকে মূর্তিটি স্বদেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া চালুর বিষয়ে কানাডায় ভারতীয় হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়াকে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপাচার্য টমাস চেজ। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন ম্যাককেঞ্জি আর্ট গ্যালারি, কানাডার বিদেশ মন্ত্রক এবং কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির প্রতিনিধিরা।
ভারতীয় হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়া জানান, ‘অন্নপূর্ণার এই অভিনব মূর্তি যে বাড়ি ফিরছে, তাতে আমরা খুশি। ভারতের এই সাংস্কৃতিক প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশে রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এমন সাংস্কৃতিক সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভারত-কানাডা সম্পর্কের পরিণতি ও গভীরতা নির্দিষ্ট করেছে।’
অন্নপূর্ণার মূর্তি সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে শিল্পী বিদ্য মেহরা জানতে পেরেছেন, ১৯১৩ সালে ভারত ভ্রমণের সময় মূর্তিটি প্রথম দেখতে পান ম্যাককেঞ্জি। সেই মূর্তি পাওয়ার জন্য তাঁর বাসনার কথা শুনতে পেয়ে বারাণসীর মন্দির থেকে তা চুরি করে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। মূর্তিটি দেবী অন্নপূর্ণার বলে চিহ্নিত করেন পিবডি এসেক্স মিউজিয়ামের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার শিল্প বিভাগের কিউরেটর সিদ্ধার্থ ভি শাহ।
দেবী অন্নপূর্ণার এই মূর্তির একহাতে রয়েছে ক্ষীরের বাটি, অন্য হাতে চামচ। এ ছাড়াও মূর্তিতে রয়েছে খাদ্য ও পুষ্টির দেবী তথা বারাণসীর রানি অন্নপূর্ণার আরও একাধিক চিহ্ন।