খাতায়-কলমে তিনি ছিলেন পর্যটক! অথচ, ভারতে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিলেন বেশ কয়েক বছর ধরে। পুলিশ সূত্রে দাবি, পর্যটকের ভেক ধরে থাকা কানাডার ওই নাগরিক আসলে গোপনে এবং বেআইনিভাবে বহু মানুষের ধর্মান্তকরণ করছিলেন। বিষয়টি নজরে আসতেই পত্রপাঠ তাঁকে তাঁর দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অসমের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই ভিনদেশির নাম ব্র্যান্ডন জোয়েল ডেভিল্ট। গত কয়েক বছর ধরে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে থাকছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার অসমের জোড়হাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ জানুয়ারি (২০২৫) ওই ব্যক্তির ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও দেশে ফেরার কোনও উদ্যোগ নেননি তিনি।
জোড়হাটের পুলিশ সুপার শ্বেতাঙ্ক মিশ্রা জানিয়েছেন, দেশে ফেরত যাওয়ার বদলে নিজের ভিসার মেয়াদ আরও বাড়ানোর আবেদন করেছিলেন ব্র্যান্ডন। কিন্তু, পুলিশের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। তাতে দাবি করা হয়, তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের গোপনে ধর্ম পরিবর্তন করানোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এই অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, 'তদন্তে নেমে আমরা জানতে পারি, তিনি ধর্মান্তকরণের সঙ্গে সত্যিই যুক্ত রয়েছেন এবং অসমের জোড়হাটের মিশন ক্যাম্পাসের গ্রেস চার্চ থেকে পুরো বিষয়টি পরিচালনা করছেন। তিনি একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালু করেছিলেন। সেই চ্যানেলটি তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের তাঁর নিজের ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করতে এবং তাঁদের সেই ধর্ম গ্রহণ করতে ব্যবহার করতেন।'
এমনকী, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে একাংশকে জোর করে তাঁদের ধর্ম পরিবর্তন করানো হয়। এ নিয়ে পরবর্তীতে তাঁরা পুলিশের কাছে ব্র্যান্ডনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, 'তাঁর ইউটিউব চ্যানেলটি ইতিমধ্যেই অকেজো হয়ে দেওয়া হলেও আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রমাণ পেয়েছি এবং সেই অনুসারেই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে।'
এরপরই কলকাতায় অবস্থিত 'ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস' (বিদেশি নাগরিকদের আঞ্চলিক নথিভুক্তিকরণ কার্যালয়)-এ গোটা ঘটনা জানানো হয়। ব্র্যান্ডন যে ভিসা পাওয়ার নিয়ম, নীতি ও শর্ত লঙ্ঘন করেছেন, সেই বিষয়েও সংশ্লিষ্ট কার্যালয়কে অবহিত করা হয়।
এরপর কর্তৃপক্ষের তরফে ব্র্যান্ডকে নোটিশ পাঠানো হয় এবং তাঁকে অবিলম্বে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিনিধিকে পুলিশ সুপার বলেন, 'জোড়হাট থানার এক আধিকারিক তাঁকে এসকর্ট করে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। তারপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সেখান থেকে এসকর্ট করে দিল্লি পাঠানো হয়। শুক্রবার - অর্থাৎ - আজ সকালে (৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) অবশেষে তাঁকে টরন্টোর বিমানে বসিয়ে দেওয়া হয়।'