খলিস্তানপন্থী হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের ঘটনায় 'অভিযুক্ত' ভারতীয় আধিকারিকদের 'দায়বদ্ধতা' স্বীকার করানোই তাদের 'উদ্দেশ্য'। এমনটাই দাবি করেছে কানাডার বিদেশ মন্ত্রক।
যুক্তরাষ্ট্রীয় নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত সরকারি তদন্তমূলক ব্যবস্থাপনার মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন কানাডার বিদেশ মন্ত্রী মেলানি জোলি।
তাঁর বক্তব্য হল, সংশ্লিষ্ট খুনের ঘটনায় যদি কোনও আধিকারিক যুক্ত থাকেন, তাহলে তাঁদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে। মেলানির কথায়, 'এটাই হল (তাঁদের সরকারের) লক্ষ্য। কিন্তু, আসলে কী ঘটেছিল, সেটা যথাযথভাবে জানা দরকার। আরসিএমপি সেই কাজই করছে।'
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ জুন ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সুরে এলাকায় খুনের ঘটনাটি ঘটে। সেই ঘটনার তদন্ত করছে 'রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)-এর ইন্টিগ্রেটেড হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন টিম (আইএইচআইটি)'। মেলানি সেই তদন্তের প্রসঙ্গটিই এখানে উল্লেখ করেন।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'আমরা ভারত সরকারের কাছে সহযোগিতা চাইছি। কারণ, আমরা চাই, যাঁরা এই খুনের ঘটনায় জড়িত রয়েছেন, তাঁরা এর দায় নিন। আমরা চাই না, ভবিষ্যতে আরও কখনও এমন কোনও ঘটনা ঘটুক। কারণ, সেই আশঙ্কা রয়েছে।'
মেলানি আরও জানান, কানাডা এখনও পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে তার কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কিন্তু, এই খুনের ঘটনায় 'অনেক চাপ তৈরি হয়েছে'।
একই সঙ্গে কানাডার বিদেশ মন্ত্রী এটাও স্পষ্ট করেছেন যে খুনের ঘটনা কোনও অবস্থাতেই 'গ্রহণযোগ্য নয়'। তবে, ভারত যে 'কানাডার মাটিতে বেড়ে চলা খলিস্তানপন্থী আন্দোলনে উদ্বিগ্ন এবং তা নিয়ে একাধিক অভিযোগও করেছে', তাও স্বীকার করেছেন মেলানি।
তবে, কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলিতে ভারত-সহ অন্যান্য দেশ কোনও হস্তক্ষেপ করছে কিনা, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি মেলানি। তবে তিনি বলেছেন, 'আমি জানি, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জটিল এবং নানা সমস্যায় পূর্ণ।'
উল্লেখ্য, খলিস্তানপন্থী হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার হাউস অফ কমন্সে একটি বিবৃতি পেশ করেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি দাবি করেন, এই খুনের নেপথ্যে ভারতীয় গুপ্তচরদের যোগ থাকতে পারে। এমনকী, ট্রুডো এও দাবি করেন, তাঁর কাছে এই বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র মারফত কিছু তথ্য এসেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর থেকেই ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। যদিও ভারত প্রথম থেকেই অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, এই সমস্ত অভিযোগ একেবারেই 'অযৌক্তিক' এবং 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত'।