ফের বিপাকে কার্তি চিদম্বরম। পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের ছেলে কংগ্রেস সাংসদ কার্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ইস্যুতে নতুন করে একটি মামলা রুজু করেছে সিবিআই।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ, শুল্কবিহীন হুইস্কি বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয়ে দিয়েগো স্কটল্যান্ড নামে একটি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় উৎপাদনকারী সংস্থাকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন কার্তি।
পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিআই যে নতুন এফআইআর করেছে, তাতে দাবি করা হয়েছে, এই মামলায় সন্দহজনক আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। দিয়েগো স্কটল্যান্ডের পক্ষ থেকে অ্য়াডভান্টেজ স্ট্র্যাটেজিক কনসাল্টিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থাকে টাকা দেওয়া হয়েছে।
সিবিআই-এর দাবি, এই সংস্থার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে কার্তি চিদম্বরম ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এ ভাস্কররামনের হাতে। যার থেকে গোয়েন্দাদের অনুমান, কার্তি ওই সংস্থাকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলেই তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থাকে মোটা অঙ্কের টাকা পাঠিয়েছিল দিয়েগো স্কটল্যান্ড।
সিবিআই তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ইউকে-র সংস্থা দিয়েগো স্কটল্যান্ড বিদেশ থেকে শুল্কবিহীন জনি ওয়াকার হুইস্কি আমদানি করত।
তথ্য বলছে, ২০০৫ সালে ভারত পর্যটন উন্নয়ন নিগম বা আইটিডিসি-এর তরফ থেকে দিয়েগো গোষ্ঠীর শুল্কবিহীন পণ্যগুলি ভারতে বিক্রি করার উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়।
অথচ, এই সংস্থা তার আগে পর্যন্ত ভারতের বাজারে প্রচুর পরিমাণে জনি ওয়াকার হুইস্কি বিক্রি করত। কিন্তু, ২০০৫ সালে জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে তাদের সেই বাজার নষ্ট হয়ে যায়। অঙ্কের হিসাবে, ভারতে তাদের জনি ওয়াকার হইস্কি বিক্রির পরিমাণ কমে যায় প্রায় ৭০ শতাংশ।
সিবিআই সূত্রে দাবি, এটা দিয়েগো স্কটল্যান্ডের কাছে বিরাট ধাক্কা ছিল। আর এই জায়গাতেই তাদের বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেন কার্তি চিদম্বরম।
কার্তি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক কী?
সিবিআই-এর দাবি, তাদের উপর যে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছিল, তা যাতে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়, সেই দাবি সামনে রেখেই কার্তি চিদম্বরমের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিয়েগো স্কটল্যান্ড কর্তৃপক্ষ।
এরপরই অ্য়াডভান্টেজ স্ট্র্যাটেজিক কনসাল্টিং প্রাইভেট লিমিটেড নামক সংস্থাটিকে ১৫,০০০ মার্কিন ডলার দেয় দিয়েগো স্কটল্যান্ড। দাবি করা হয়, এই টাকা কনসালটেন্সি ফি বা পরামর্শ দেওয়ার পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া হয়েছে। যদিও সিবিআই সেই দাবি মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, কার্তি দিয়েগো স্কটল্য়ান্ডকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলেই এই আর্থিক লেনদেন হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, কার্তি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা চলছে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। যদিও, তার পরের মাসেই জামিন পেয়ে যান তিনি।