মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে বিষাক্ত কাফ সিরাপ ‘কোল্ড্রিফ’ খাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ২০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা দেশে। এই পরিস্থিতিতে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে কড়া নির্দেশ দিল কেন্দ্র। অন্যদিকে, শিশু মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু। তাদের তরফে ভারতকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, কোন কোন দেশে রপ্তানি করা হয়েছে এই সিরাপ।
কাশির সিরাপ গুণমান যাচাইয়ে জোর দেওয়ার জন্য সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ামক সংস্থার প্রধান ‘ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই) রাজীব সিং রঘুবংশী। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেন উৎপাদনের আগে সমস্ত ওষুধের পরীক্ষা নিশ্চিত করে। পাশাপাশি, বাজারে ওষুধের ব্যাচগুলি সরবারাহের আগেও যেন খতিয়ে দেখা হয় এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়। একইসঙ্গে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যাতে ওষুধ নির্মাণকারী সংস্থাগুলির একটি উন্নত ভেন্ডার কোয়ালিফিকেশন সিস্টেম থাকে। অনুমোদিত এবং নির্ভরযোগ্য বিক্রেতাদের কাছ থেকেই তাদের কাঁচামাল কিনতে হবে।' এছাড়াও ওষুধ নির্মাণের ক্ষেত্রে যাতে নির্ধারিত নির্দেশিকা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়, সেটাও নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-'নেতিবাচক স্কোরকার্ড!' US-এ বেড়েছে মূল্যস্ফীতি, ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে তুলোধোনা গীতার
বর্তমানে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘কোল্ডরিফ’ নামে একটি কাশির সিরাপ। ইতিমধ্যে মধ্যপ্রদেশ-সহ বেশ কিছু রাজ্য ওই কাশির সিরাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই আবহে শিশু মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও কাশির সিরাপ বিদেশে রপ্তানি হয়েছে কিনা, তা নয়া দিল্লির থেকে জানতে চেয়েছে হু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই মুহূর্তেই তথ্যটা জানা দরকার। তারপর এই সিরাপ নিয়ে জারি করা প্রয়োজন 'চিকিৎসা পণ্য সতর্কতা।' তার মাধ্যমেই সারা বিশ্বে কোল্ডরিফ সিরাপ থেকে বিপদের আশঙ্কা কমবে। যদিও এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার ভারতের সিরাপের দিকে আঙুল তুলেছে হু এবং সিডিসি। ২০২৩ সালে গাম্বিয়া অভিযোগ করে যে ভারতের তৈরি হওয়া কাফ সিরাপ খেয়ে প্রাণ হারিয়েছে সেই দেশের কিছু শিশু। এগুলিতে অশুদ্ধি মেশানো ছিল বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, এর ৪ মাস আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ঘটনার জন্য ভারতীয় কোম্পানিকে দায়ী করে। তারা জানায়, ভারতে তৈরি এই ওষুধগুলির গুণমান ভালো নয়। তাই এগুলি খাওয়ার সঙ্গে গাম্বিয়ার ৪ শিশুর মৃত্যুর যোগ থাকলেও থাকতে পারে।