বিদেশে জমি, বাড়ি ইত্যাদি কোনও স্থাবর সম্পত্তি কেনা যাবে না। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাঙ্কে কোনওরকম টাকা রাখার উপরেও জারি হল নিষেধাজ্ঞা। নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে সম্প্রতি এমন নির্দেশিকাই জারি করা হল সে দেশের নাগরিকদের জন্য।
শুক্রবার নেপাল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া, বিদেশে জমি-বাড়ি কেনা সমেত কোনওরকম আর্থিক লেনদেন করা যাবে না। এই নিদের্শিকা অমান্য করলে নিয়ম লঙ্ঘনকারীর কড়া শাস্তি হতে পারে, এমনটাও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, দেশের আর্থিক অবস্থা সামাল দিতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। শ্রীলঙ্কার মতো আর্থিক বিপদে যাতে না পড়তে হয়, তার জন্য আগে থেকেই সাবধানী পদক্ষেপ নিচ্ছে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
প্রসঙ্গত, এই নির্দেশিকা অনুযায়ী বিদেশের সঙ্গে সবরকম আর্থিক লেনদেন বন্ধ থাকবে, তেমনটা নয়। বরং বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে। শুধুমাত্র সেই নির্দিষ্ট খাত ও নির্দিষ্ট কাজেই আর্থিক লেনদেন চালানো যাবে। এর বাইরে আর কোনওরকম লেনদেনই বরদাস্ত করা হবে না বলে জানানো হয়। এমনকী কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত লেনদেনেও থাকবে নিষেধাজ্ঞা। হঠাৎ এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আমদানি রফতানির ব্যবসায় প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের এপ্রিল মাস নাগাদ বিদেশি গাড়ি ও অন্যান্য বিলাসবহুল দ্রব্যের আমদানিতে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। অর্থের সংকট সামাল দিতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সাধারণত কিছু ক্ষেত্রে নগদে ঘাটতি কমাতে ঋণের উপর সুদের হার বাড়ানো হয়। তবে সবক্ষেত্রে সে পদ্ধতি কার্যকর হয় না।
এমনকী দীর্ঘমেয়াদী ঋণ মেটানোর হার তুলনামূলকভাবে স্লথ হওয়ায় আমদানি বন্ধ করার পথ বেছে নিতে হয়। গত এপ্রিলে তেমন পদ্ধতিই অবলম্বন করে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মোট ৩ শতাংশ বেড়েছে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়। নতুন সঞ্চয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে মুদ্রার ভাঁড়ারের অবস্থা যা ছিল, তার থেকে সাড়ে আট মাসে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে সাম্প্রতিক অবস্থার।