'কৃষি আয়' হিসেবে দেখিয়ে কর ফাঁকি দেওয়া যাবে না। আরও কঠিন নজরদারির নীতি নিল কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি কর নীতিতে ফাঁকফোকর তুলে ধরে। তারপরেই কড়া হওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের।
অতি-ধনী কৃষকদের এবার থেকে কড়া নজরদারি করবে আয়কর কর্তৃপক্ষ। আইনের অধীনে 'করমুক্ত' -এমন ক্ষেত্রে, যেখানে আয় বছরে ১০ লক্ষ টাকার সীমা ছাড়িয়ে যায়, তেমন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হবে। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। কমিটি জানিয়েছে, প্রায় ২২.৫% ক্ষেত্রে, সঠিক মূল্যায়ন এবং নথির যাচাই ছাড়াই কর-মুক্ত আয়ের দাবিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার প্যানেল 'কৃষি আয় সম্পর্কিত মূল্যায়ন' শীর্ষক রিপোর্টে এই উল্লেখ করে। এটি ভারতের অডিটর এবং কম্পট্রোলার জেনারেলের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। অতি-ধনী কৃষকরা কীভাবে কর ফাঁকি দিচ্ছেন? তার একটা সহজ উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে। ছত্তিশগড়ের এক কৃষিজীবীর উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত কৃষিজীবী তাঁর কৃষি জমি বিক্রি করে ১.০৯ কোটি টাকার বিপুল অঙ্ক পান। কিন্তু সেটা কৃষি আয়-এর আওতায় দেখিয়ে কর ছাড়ের দাবি করেন।
ত্রুটির চিহ্নিত করে সংসদীয় প্যানেল বলে আয়কর কর্তৃপক্ষ 'অ্যাসেসমেন্ট রেকর্ড'-এ কর মুকুব সাপোর্ট করে, এমন কোনও 'নথিপত্র' যাচাই-ই করেনি।
আয়কর আইন, ১৯৬১-র ১০(১) ধারার অধীনে, কৃষি আয়ে কর প্রযোজ্য হয় না। রাজস্ব বা কৃষি জমি হস্তান্তর এবং কৃষি থেকে আয় আইনের অধীনে 'কৃষি আয়' হিসাবে বিবেচিত হয়।আয়কর বিভাগ জানিয়েছে, জালিয়াতির সমস্ত কেস পরীক্ষা করার জন্য তাদের যথেষ্ট লোকবল নেই।
এই সমস্যা দূরীকরণে অর্থ মন্ত্রক সরাসরি কর-মুক্ত হওয়ার অ্যাপিল যাচাই করার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থা তৈরি করেছে। কৃষি আয় ১০ লক্ষ টাকার বেশি হলে সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত যাচাইকরণের নীতি গৃহিত হবে।
'কৃষিতে করের উল্লেখ করতেই রাজনীতিবিদরা ভয় পান। এটা সত্য যে বেশিরভাগ কৃষকই দরিদ্র। তাঁদের ছাড় দেওয়া উচিত। কিন্তু বড় কৃষকদের কর না দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই,' বলেন আয়কর বিভাগের প্রাক্তন আধিকারিক নবাল কিশোর শর্মা।
অতি ধনী কৃষকরা কর দিলে ঠিক কতটা লাভ হবে দেশের? এক পরিকল্পনা কমিশনের রিপোর্টে উঠে এসেছে সেই তথ্য। যদি দেশের শীর্ষ ০.০৪% বড় কৃষিজীবী পরিবার এবং শীর্ষ ৩০% ফার্ম সংস্থা আয়ের জন্য কর দেয়, তাহলে বার্ষিক ৫০,০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত কর সংগ্রহ হতে পারে।