বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে ৪০টি প্রকল্প রূপায়ণে ছাড়পত্র দিল কেন্দ্রের পর্যটন মন্ত্রক। 'স্টেট্স/ইউনিয়ন টেরিটোরিজ ফর ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট' (এসএএসসিআই)-এর আওতায় এবং এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতেই কেন্দ্রের তরফে এই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পগুলির কাজ শেষ করতে ৩,২৯৫.৭৬ কোটি টাকা খরচ করা হবে। দেশের মোট ২৩টি রাজ্যে এই প্রকল্পগুলি গড়ে তোলা হবে। কেন্দ্রের আশা, এর ফলে ওই সমস্ত এলাকায় নতুন করে প্রচুর পরিমাণে কর্মী নিয়োগের পথ খুলে যাবে। পর্যটন শিল্প চাঙ্গা হবে এবং তাকে নির্ভর করে সামগ্রিকভাবে অঞ্চলভিত্তিক আর্থিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি ঘটবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, এসএএসসিআই-র আওতায় প্রকল্প রূপায়ণ করতে যাতে রাজ্য সরকারগুলির কোনও সমস্যা না হয়, সেই ব্যবস্থা করবে কেন্দ্রীয় সরকার।
ব্যয় সংক্রান্ত বিভাগের নির্দেশিকা অনুসারে, এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য কিছু গাইডলাইন তৈরি করেছে পর্যটন মন্ত্রক। যাতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের অধীনস্ত প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নয়নের কাজ সারতে রাজ্য সরকারগুলি সুদবিহীন ঋণ পেতে পারে।
এই প্রকল্পগুলির রূপায়ণ সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর। ওই সময়ের মধ্যে মোট ৮৭টি প্রকল্পের প্রস্তাব জমা পড়েছিল। যার জন্য প্রাথমিকভাবে ৮,০০০ কোটি টাকার খরচ ধরা হয়েছিল।
সবদিক খতিয়ে দেখার পর সেই ৮৭টি প্রকল্পের মধ্যে ৪০টি প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে আর্থিক ছাড়পত্র দিয়েছে ব্যায় সংক্রান্ত বিভাগ।
এই উদ্যোগের অধীনে প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেওয়া এবং সেগুলি পাস করানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে রাজ্য সরকারগুলির প্রতিনিধিরা তাঁদের প্রস্তাব জমা করেছেন। প্রকল্প পাস করানোর জন্য বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবগুলিতে সেই শর্ত কতটা মানা হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হয়েছে।
এই শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে - ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, পর্যটন কেন্দ্রটির স্থায়িত্বের সম্ভাবনা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত পরিমাণে জনসমাগম হলে তা সামলানোর ক্ষমতা ও দক্ষতা, এবং সর্বোপরি সেই পর্যটন কেন্দ্রের মাধ্যমে যত বেশি পরিমাণে সম্ভব কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের কথায়, 'আমাদের লক্ষ্য ছিল, এমনভাবে প্রকল্প রূপায়ণ করতে হবে, যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিপণনের ক্ষেত্রে তার নির্দিষ্ট কিছু সুফল পাওয়া যায়। '
মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিই সরাসরি প্রকল্প রূপায়ণ করবে। এবং সেই কাজ শেষ হয়ে গেলে তারাই সেটি পরিচালনা করবে। ওই প্রকল্প যাতে চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করে, সেটাও সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।
গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত আরও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম কিস্তির ৬৬ শতাংশ টাকা কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে সরাসরি পাঠানো হয়ে গিয়েছে।
মন্ত্রকের লক্ষ্য হল, ২ বছরের মধ্যেই এই প্রকল্পগুলির কাজ শেষ করা। সেই কাজ ঠিক মতো এগোচ্ছে কিনা, তার জন্য মন্ত্রকের তরফে নজর রাখা হবে। ২০২৬ সালের মধ্যেই প্রকল্পগুলির জন্য বরাদ্দ সমস্ত টাকা রাজ্য সরকারগুলিকে পঠিয়ে দেওয়া হবে।
এই উদ্যোগের অধীনে উত্তরপ্রদেশের বটেশ্বর, গোয়ার পন্ডা, অন্ধ্রপ্রদেশের গান্দিকোটার মতো বহু এলাকায় বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।