ইদানীংকালে সারা দেশে লাগাতার ট্রেন দুর্ঘটনা বেড়েছে বলে বারবার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, এর জেরে হতাহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ। কিন্তু, সেই সংখ্যাটা ঠিক কত? শুক্রবার তারই জবাব দিল রেল মন্ত্রক তথা কেন্দ্রীয় সরকার। যাতে আদতে দুর্ঘটনায় রাশ টানার ছবিই তুলে ধরা হয়েছে।
ওই দিন রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পেশ করা হয়। তাতে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে এখনও পর্যন্ত সারা ভারতে মোট ১৫২টি গুরুতর রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে প্রাণ হারাতে হয়েছে ৩৬২ জনকে। নিহতদের তালিকায় ১১ জন রেলকর্মীও রয়েছেন। সব মিলিয়ে এই দুর্ঘটনাগুলিতে আহত হয়েছেন ৯৫৮ জন।
প্রসঙ্গত, এখানে শুধুমাত্র সেইসব গুরুতর রেল দুর্ঘটনা বা 'কনসিকোয়েন্সিয়াল ট্রেন অ্যাক্সিডেন্ট'-এর কথাই বলা হয়েছে, যে দুর্ঘটনাগুলিতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অথবা কেউ আহত হয়েছেন। কিংবা কোনও ধরনের সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এবং সেই দুর্ঘটনাগুলির জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট রুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
ইদানীংকালে রেল দুর্ঘটনা নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা হলেও কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু অন্য কথা বলছে। রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত তথ্য পেশ করার সময় তারা দাবি করেছে, রেল দুর্ঘটনা রুখতে গত ১০ বছর ধরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছে। অত্যাধুনিক নানা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এবং সেই কারণেই ট্রেন দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমেছে।
রেলমন্ত্রকের পেশ করা তথ্যে আরও দাবি করা হয়েছে, ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে যেখানে সারা দেশে মোট ১৩৫টি রেল দুর্ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছিল, সেখানে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে মোট ৪০টি রেল দুর্ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
রেল মন্ত্রকের তরফে রাজ্যসভায় যে বিবৃতি পেশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে, 'মূলত যে কারণে এই দুর্ঘটনাগুলি ঘটেছে, তা হল - রেললাইনে বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি, রেলের কামরায় নানা ধরনের সমস্যা, যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে যাওয়া, মানুষের দ্বারা ঘটিত বিভিন্ন ভুল ইত্যাদি।'
ওই বিবৃতিতে আরও যে পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে, তা হল - '২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এই ধরনের গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটেছিল ১,৭১১টি (গড় সংখ্যা - বছরে ১৭১)। সেখানে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রেল দুর্ঘটনা কমে হয়েছে ৬৭৮টি (গড় হিসাব - বছরে ৬৮)। এই হিসাবে গত ১০ বছরে রেল দুর্ঘটনা সামগ্রিকভাবে কমেছে ৬০ শতাংশ।'