উৎকর্ষ আনন্দ, অনিরুদ্ধ ধর
গুজরাটে বিলকিস বানো গণধর্ষণের ঘটনার সাজাপ্রাপ্ত ১১জন বন্দিকে আগাম মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই দাবিতে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন বিলকিস বানো। সেই মামলা এবার কেন্দ্রীয় সরকার ও গুজরাট সরকারকে নোটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট।
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট এনিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও গুজরাট সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে। ২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পরবর্তী ক্ষেত্রে বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তার পরিবারের সদস্যদের খুনও করা হয়েছিল। পরে সেই ঘটনার জেরে ১১জনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তারা আগাম জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যান। এই মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গিয়েছিলেন বিলকিস। তবে এবার এনিয়ে কেন্দ্র ও গুজরাট সরকারকে নোটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত এই অপরাধকে ভয়াবহ বলেও উল্লেখ করেছিল। আগামী ১৮ এপ্রিল আদালতে এই মামলার শুনানি হবে।
বিচারপতি কেএম যোশেফ, বিভি নাগারত্নের নয়া বেঞ্চ কেন্দ্র ও গুজরাট সরকারের কাছে নোটিশ পাঠিয়ে জানতে চেয়েছে যে ওই সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি সম্বলিত যে ফাইলগুলো রয়েছে তা পাঠিয়ে দিন।
এদিকে তাদের মুক্তিকে চ্য়ালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতিদের বেঞ্চ সব মিলিয়ে ৬টি পিটিশন গ্রহণ করেছে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বুধবার নতুন বেঞ্চ করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিলেন।
৪ জানুয়ারি বিচারপতি অজয় রাস্তোগি ও বেলা এম ত্রিবেদী বিলকিস সহ অন্যান্যদের আবেদন গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু বিচারপতি ত্রিবেদী পরে কোনও কারণ না দেখিয়েই এই শুনানি থেকে সরে দাঁড়ান।
এদিকে গত বছর ৩০ নভেম্বর বিলকিস বানো শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ১১জন যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তকে কেন আগাম মুক্তি দেওয়া হল তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি জানিয়েছিলেন, এই সিদ্ধান্ত সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে গত বছর ১৫ অগস্ট ১১জন সাজাপ্রাপ্তকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার।
এদিকে বিলকিস তাঁর রিট পিটিশনে জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার একেবারে যান্ত্রিক একটি নির্দেশ ইস্যু করেছে। সুপ্রিম কোর্ট যে আইনের কথা জানিয়েছে তাকে মানতে চায়নি গুজরাট সরকার।
এদিকে ওই সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির ঘটনায় হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন বানো। বলা হয়েছিল গোটা দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির আনন্দে মাতোয়ারা তখন ওই সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দেওয়া হল। তাদের সকলের সামনে মালা পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল। তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হল। মিষ্টি বিতরণ করা হল। এই ছবি দেখে শিউরে উঠেছিলেন বিলকিস। এদিকে তারপরই এই মুক্তির বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেছিলেন অনেকেই।
এদিকে ঘটনার সময় বানোর বয়স ছিল ২১ বছর । তিনি সেই সময় পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। সেই সময় তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।গোধরা ট্রেনে আগুন ধরানোর পরেই শুরু হয়েছিল এই ভয়াবহ ঘটনা। তাঁর তিন বছরের মেয়ে সহ পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করা হয়েছিল।
তবে এবার এনিয়ে কেন্দ্র ও গুজরাট সরকারকে নোটিশ পাঠাল আদালত।