'ইক্লুশন অফ ট্রান্সজেন্ডার চিল্ড্রেন ইন স্কুল এডুকেশন' সংক্রান্ত বিষয়ে যে প্রশিক্ষণ নীতি নির্দেশিকাটি এনসিইআরটির ওয়েবসাইটে ছিল, তা ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা নিয়ে বহু বিতর্কের সূচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, তৃতীয় লিঙ্গভূক্ত বা সমকামী অথবা রূপান্তরকামীদের সমানাধিকার নিয়ে বহুবিধ বিষয় নানা সময়ে দেশের আইনে জায়গা করেছে। তবে স্কুল পর্যায়ে এই ইস্যুতে সচেতনার পাঠ সম্পর্কীয় ওই প্রশিক্ষণ নীতি নির্দেশিকাটি এইআরটি ওয়েবসাইট থেকে সরে যেতেই ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে। এই ইস্যুতে সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রশিক্ষণ নীতি নির্দেশিকাটিকে চূড়ান্ত করতে কয়েকটি পর্ব এখনও বাকি। আর সেই কারণেই তা ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে অনুপমা দেবী, লোকসভায় এক লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন, এটি একটি 'অ্যাকাডেমিক এক্সারসাইজ', ফলে এটিকে চূড়ান্ত পর্যায়ে আনার আগে বা জনগণের কাছে পেশ করার আগে কিছু পর্ব পেরিয়ে তবে আসতে হবে। তিনি বলেন, এনসিআরটি সর্বোতভাবে লিঙ্গসংবেদনশীলতা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছে শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাবিদ, বিদ্যালয় প্রধানদের। একই সঙ্গে তিনি বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের শিশুদের বিষয়ে যে ভাবনা চিন্তা রয়েছে তা বিভিন্ন ম্যানুয়াল, মডিউল ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত নথিতে তুলে ধরা হয়েছে। সংসদে অধীর চৌধুরীর এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনুপমা দেবী এদিন এই বক্তব্য তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, স্কুলের কার্যপদ্ধতির মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক পরিচিতির বাইরে বেরিয়ে ভাবনা চিন্তা বা লিঙ্গ নিরপেক্ষ শৌচাগারের কথা ওই নির্দেশিকায় বলা রয়েছে। এই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত নীতি নির্দেশিকাটি এনসিইআরটির ওয়েবসাইট থেকে সরে যেতেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কার্যত ক্ষোভ উগড়ে দেন বিরোধীরা। অনেকেই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের সমালোচনায় সুর চড়ান। গত ৬ ডিসেম্বর মাদ্রাজ হাইকোর্ট এনসিআরটির এই পদক্ষেপের চরম ভর্ৎসনা করে। ঘটনাকে অত্যন্ত 'শকিং' বলেও বর্ণনা করেন বিচারপতি এন আনন্দ ভেঙ্কটেশ। জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের তরফে এই নির্দেশিকা সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে, ম্যানুয়ালটির পাঠ্য শিশুদের একটি অনাবশ্যক মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রণা ও আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, যা অভিপ্রেত নয়। এই নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়। সংসদে অধীর চৌধুরীর প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র জানিয়েছে, যে ম্যানুয়েলটি ওয়েবসাইট থেকে সরানো হয়েছে তা চূড়ান্ত ছিল না।