দিনকয়েক আগেই ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে সতর্ক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার একধাপ এগিয়ে সংসদে ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত বিল আনতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। যা সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে পেশ করা হবে।
সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সংসদের শীতকালীন অধিনেশনে ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং সরকারি ডিজিটাল কারেন্সি নিয়ন্ত্রণ বিল, ২০২১’ আনা হচ্ছে। যে বিল অনুয়াযী, ভারতে সমস্ত বেসরকারি বা ব্যক্তিগত ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। শুধুমাত্র রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) যে ডিজিটাল কারেন্সিতে অনুমোদন দেবে, সেগুলিই ভারতে চলবে। কেন্দ্রের নয়া বিলে সেই সংক্রান্ত নীতি এবং কাঠামো তৈরি করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার ‘সিডনি ডায়লগ’-এর ভার্চুয়াল ভাষণে মোদী জানান, ডিজিটাল যুগে সবকিছু পালটে যাচ্ছে। রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সমাজের নতুন সংজ্ঞা উঠে আসছে। সার্বভৌমত্ব, প্রশাসন, নৈতিকতা, মানুষের অধিকার এবং নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলি নিয়ে নয়া প্রশ্ন তুলছে ডিজিটাল যুগ। সেই পরিস্থিতিতে নয়া প্রযুক্তির প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করে মোদী জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তি তৈরির জন্য বিনিয়োগ করা হচ্ছে। টেলিকম ক্ষেত্রে 5G এবং 6G প্রযুক্তি চালুর জন্যও লগ্নি করছে ভারত। মোদীর ভাষণে উঠে আসে ক্রিপ্টোকারেন্সি। যা সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তা নিয়ে মোদী বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক দেশ যাতে এই বিষয়ে একত্রিতভাবে কাজ করে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিপ্টোকারেন্সি যাতে ভুল হাতে না যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। যা আমাদের শিশুদের জীবন নষ্ট করে দিতে পারে।’
সেই ভার্চুয়াল ভাষণের আগে ভারতে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মোদী। ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসে অর্থাের জোগান নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে কোনও ব্যক্তিগত ডিজিটাল মুদ্রা তৈরি করা বা সেটিকে আইনি বৈধতা দেওয়া উচিত নয় সরকারের। বৈঠকে থাকা এক ব্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিযা (আরবিআই) ক্রিপ্টোকারেন্সির নেপথ্যে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রস্তুত। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আইনি বৈধতা দেওয়ার পক্ষে নয় আরবিআই। কারণ এই মুদ্রাগুলি অনিশ্চয়তায় ঘেরা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক। বেশিরভাগ সরকারী বিভাগ আরবিআইয়ের সঙ্গে একমত। কিন্তু তারা বিভিন্ন লবি গ্রুপের চাপের মধ্যে রয়েছে। যারা স্থিতিশীলতা চায়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে শীর্ষ নেতৃত্ব।'