কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটের বরাদ্দ অনুসারে হোক রাজ্যের বাজেট। নীতি আয়োগের বৈঠকে রাজ্যগুলিকে নয়া প্রস্তাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস এবং বামেরা কেন্দ্রের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাব দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী। শনিবারের এই বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির লেফটেন্যান্ট গভর্নরেরা উপস্থিত থাকলেও গরহাজির ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং।
বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে নীতি আয়োগের ষষ্ঠ বৈঠকের আয়োজন করেছিল কেন্দ্র। আর ভার্চুয়াল এই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্র–রাজ্যের সমন্বয়ের পক্ষে জোরালো সওয়াল করে বলেন, ‘ভারতের উন্নয়নের মূল ভিত্তিই হল কেন্দ্র–রাজ্যের সমন্বয়। দেশের উন্নতির জন্য সহযোগিতামূলক কাঠামো আমাদের প্রয়োজন। কেন্দ্র–রাজ্যের প্রতিযোগিতামূলক এবং সহযোগিতামূলক সমন্বয় বজায় রেখে চলা উচিত।’ কেন্দ্র–রাজ্য সুসম্পর্কের উপর জোর দিয়ে সুকৌশলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিতে চেয়েছেন মোদী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। কারণ ইদানিং বিজেপি নেতারা প্রচারে বলতে শুরু করেছেন ডাবল ইঞ্জিন সরকার প্রয়োজন।
এরপরই প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, করোনাভাইরাস-পর্বে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারগুলি যেভাবে যৌথভাবে কাজ করেছে, তা গোটা বিশ্বের সামনে ভারতের একটা পৃথক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। তারপরেই প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দেন, আগামিদিনে দেশের আর্থিক উন্নতির জন্য সমন্বয় রেখে কেন্দ্র–রাজ্যের বাজেটও হওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প বুঝে সেই অনুযায়ী বাজেট করা উচিত রাজ্যগুলির। উন্নয়নের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেন্দ্র–রাজ্য সমন্বয়ের অংশীদার করতে চেয়েছেন জেলাগুলিকে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক সমন্বয়ের এই উদ্যোগ গণতন্ত্রকে মজবুত করবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে ‘সংবিধান বিরোধী’ বলে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজ্য ও কেন্দ্রের বাজেটের বিষয় অনেক সময় আলাদা হয়। কেন্দ্রের আশায় বসে থাকলে রাজ্যের উন্নয়ন ঘটবে না। প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন, সেটা আসলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত।’ তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কেন্দ্রের এই প্রস্তাব মানা সম্ভব নয়। যে সমস্ত রাজ্য ভালো কাজ করছে, কেন্দ্রের উচিত বাজেট তৈরির আগে সেইসব রাজ্যগুলির কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া।’