চণ্ডীগড়ে বেপরোয়া পোর্শের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক স্কুটার চালকের। এই ঘটনায় বিলাসবহুল গাড়ির মালিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সঞ্জীব বাবুতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।কিন্তু তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্তকের জামিন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মৃত যুবকের পরিবার। একই সঙ্গে প্রশাসনকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। (আরও পড়ুন: হরিয়ানায় পুরভোটে পচা শামুকে পা কাটল বিজেপির, মেয়র নির্বাচনে হার পদ্ম প্রার্থীর)
আরও পড়ুন: আদানি নয়, শতাংশের নিরিখে চলতি বছরে এই ভারতীয় শিল্পপতির ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি
আরও পড়ুন: রেশন কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যোগ নিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাবে সায় রাজ্যের
দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে চণ্ডীগড়ের সেক্টর ৪-এর একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম ভেঙে ভুল দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসছিল পোর্শেটি। সেই সময়েই রাস্তা দিয়ে দু’টি স্কুটার যাচ্ছিল। একটি স্কুটারে ছিলেন এক তরুণ। অপর স্কুটারে দু’জন মহিলা ছিলেন। দ্রুত গতিতে থাকা সাদা রঙের ওই পোর্শে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে দু’টি স্কুটারে। সংঘর্ষে স্কুটার থেকে পড়ে যান ২১ বছর বয়সি ওই তরুণ। তাঁর একটি পা কাটা পড়ে দুর্ঘটনায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। অন্য স্কুটারের দুই মহিলাও আহত হন। তাঁরা বর্তমানে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।পুলিশ সূত্রে খবর, পোর্শেটির গতি যথেষ্ট বেশি ছিল। দু’টি স্কুটারে ধাক্কা মারার পরে আরও কিছুটি এগিয়ে যায় পোর্শেটি। তারপরে রাস্তার ধারে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে এবং ট্র্যাফিক চিহ্নের বোর্ডে ধাক্কা মারে। শেষে একটি গাছে ধাক্কা মেরে থামে গাড়িটি। গাড়ির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই খুঁটিটিও। সংঘর্ষে একটি স্কুটার সম্পূর্ণ দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। পোর্শের সামনের অংশ এবং সামনের দিকে একটি চাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। (আরও পড়ুন: দিল্লিতে ‘সফাই অভিযান’ শাহের পুলিশের, গ্রেফতার আরও ১২ বাংলাদেশি)
দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাইক আরোহী বছর চব্বিশের যুবক অঙ্কিতের। নয়াগাঁওয়ে পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। আদতে অঙ্কিতরা আবার উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। মঙ্গলবারই ছিল অঙ্কিতের জন্মদিন। ফলে সেই উপলক্ষে তাঁর গোটা পরিবার একটি পার্টির আয়োজন করেছিল। সমস্ত প্রস্তুতি ছিল সারা। বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপনের আনন্দে মেতে ওঠার কথা ছিল অঙ্কিতের। কিন্তু কেউই বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি যে, অঙ্কিতের জীবনের শেষ দিন এটাই হয়ে যাবে।বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা গাড়ির ধাক্কার অভিঘাতে তাঁর দেহ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। (আরও পড়ুন: ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা ৭ বাংলাদেশি হিন্দু আটক, তবে ৩ দালাল ধরতে ব্যর্থ BGB)
আরও পড়ুন: 'মেয়েদের দুটো জায়গার চুল ছাড়া অন্য জায়গার চুল কাটা হারাম'
অন্যদিকে, বিলাসবহুল ওই পোর্শে গাড়ির মালিক সঞ্জীব সেক্টর ৮-এর বাসিন্দা। পেশায় ব্যবসায়ী সঞ্জীব প্রপার্টি ডিলার হিসেবে কাজ করেন।তিনি সুভাষ মাঙ্গাত অ্যান্ড গ্রুপের ডিরেক্টর পদে রয়েছেন।দুর্ঘটনার সময় গাড়িতেই ছিলেন সঞ্জীব। তারপরেও কীভাবে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে যান তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মৃত অঙ্কিতের পরিবার।মঙ্গলবার বেশ কয়েক জন মহিলাকে নিয়ে থানায় যান মৃতের বোন সোনিকা আসওয়াল। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত সঞ্জীব জামিন পেয়ে যান।যা শুনে তিনি হতবাক হয়ে যান। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরেও প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।সোনিকা বলেন, বেপরোয়া গাড়ি তার ভাইকে কয়েক মিটার টেনে নিয়ে গিয়েছিল, সেই গাড়ির চালককে কেন এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া হল।এদিকে, বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং পথসুরক্ষা বিধি ভাঙার অভিযোগে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গত বছরের মে মাসে মহারাষ্ট্রের পুণের পোর্শেকাণ্ড ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। ওই বছর ১৯ মে দুই ইঞ্জিনিয়ারকে পিষে মারার অভিযোগ ওঠে চালকের বিরুদ্ধে। পুণের ওই দুর্ঘটনার সময়ে পোর্শেটি চালাচ্ছিল ১৭ বছর বয়সি এক কিশোর।