টাকা তোলা যাবে না। জমা নেওয়া যাবে না টাকা। ঋণ দেওয়া যাবে না। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) বিধিনিষেধ চাপতেই মুম্বইয়ের নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেডের সামনে বিধিনিষেধ বেঁধে গেল। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কিং কাজকর্ম শেষ হওয়ার পরে সেই বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল। আর তারপরে শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যাঙ্কের সামনে আতঙ্কিত মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে। লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে গ্রাহকদের। বেঁধে গিয়েছে হট্টগোল। তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশও। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, তত আতঙ্ক গ্রাস করছে গ্রাহকদের। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
কীভাবে ইএমআই দেব? আতঙ্কে ভুগছেন গ্রাহকরা
চোখেমুখে একরাশ আতঙ্ক নিয়ে সীমা ওয়াঘমোরে নামে এক গ্রাহক বলেছেন, 'আমরা গতকালই টাকা জমা দিয়েছিলাম। সেইসময় ওরা (ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ) কিছু বলেনি। ওদের বলা উচিত ছিল যে এরকম কিছু একটা হবে। ওরা বলছে যে তিন মাসের মধ্যে টাকা ফেরত পেয়ে যাব আমরা। আমাদের ইএমআই দিতে হবে। আমরা জানি না যে কীভাবে সেইসব টাকা মেটাব।'
সীমা শুধু একা নন, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যেকে একইরকম আতঙ্কে ভুগছেন। চোখে-মুখে ধরা পড়েছে আতঙ্ক। ব্যাঙ্কের সামনেই লাগিয়ে দেওয়া ব্যানার পড়ছেন। আর তারপর কী হবে, সেটা ভেবেই আতঙ্কে ভুগছেন।
৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত মিলবে!
যে ব্যানারে লেখা আছে, গ্রাহকদের স্বার্থে আরবিআইয়ের তরফে ব্যাঙ্কের উপরে বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে। প্রত্যেক গ্রাহকের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ ডিপোজিট ইনসিওরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশনের (ডিআইসিজিসি) কাছে জমা রাখা হয়েছে। সেটা সুরক্ষিত আছে। আর ৯০ দিন বা তার আশপাশের সময়ের মধ্যে সেই টাকা ফেরত মিলবে। সেইসঙ্গে ব্যাঙ্কের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, গ্রাহকরা যে টাকা রেখেছিলেন, সেটা সুরক্ষিত আছে।
আরবিআই কোন কোন বিষয়ে বিধিনিষেধ চাপিয়েছে?
আর আরবিআইয়ের যে বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে, তা বৃহস্পতিবার জারি করা হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নোটিশে জানানো হয়েছে, আরবিআইয়ের থেকে আগেভাগে অনুমতি না নিয়ে মুম্বইয়ের নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেড কোনও ঋণ মঞ্জুর করতে পারবে না। করতে পারবে না কোনও বিনিয়োগ। নতুন করে টাকা জমা নিতে পারবে না। বিক্রি করতে পারবে না কোনও সম্পত্তি। কোনও টাকা দিতে পারবে না। টাকা দেওয়ার বিষয়েও কোনও চুক্তি করতে পারবে না বলে আরবিআইয়ের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।