বাংলাদেশের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের খুনের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার উপজেলা থেকে ওই হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, রিপন দাস (২৭) নামে ওই যুবক একটি ওষুধের দোকানে কাজ করতেন। গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুলকে যখন হত্যা করা হয়েছিল, তখন রিপনের হাতে বঁটি ছিল। যা ভিডিয়ো ফুটেজে ধরা পড়েছিল। ভিডিয়ো দেখে শনাক্ত করার পর থেকে রিপনের খোঁজ চলছিল। তারইমধ্যে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রিপনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
আইনজীবী হত্যাকাণ্ডে মোট কতজন গ্রেফতার?
আর রিপনের গ্রেফতারির ফলে সাইফুলের খুনের ঘটনায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৬ নভেম্বর হিন্দু সন্ন্যাসী তথা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাসকে চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করার মধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, সেই উত্তেজনাকর পরিবেশের মধ্যে সাইফুলকে কুপিয়ে খুন করা হয়।
খুনের পাশাপাশি পুলিশের কাজে বাধা, আইনজীবীদের উপরে হামলা, পুলিশের উপরে হামলার মতো অভিযোগে মোট ছ'টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৪১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুনের মামলায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিডিয়োর প্রেক্ষিতে দাবি করা হয়, সাইফুলকে প্রথমে কোপান তিনজন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তারপরও লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁর নিথর দেহকে পেটানো হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
খুনের মামলায় চিন্ময় প্রভুর নাম যুক্ত করার দাবি
আর সেই খুনের ঘটনায় চিন্ময় প্রভুকে অভিযুক্ত করার দাবি তুলেছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীদের একাংশ। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির দাবি, সাইফুলকে হত্যার ঘটনা তো বটেই, ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে যা যা ঘটেছে, তার প্রতিটি ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে চিন্ময়ের নাম থাকা উচিত। কারণ তিনি উস্কানিমূলক ভাষণ দেন। আর তারপরই উত্তেজনা তৈরি হয় বলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির তরফে দাবি করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ তোলেন আইনজীবীদের একাংশ।
দোষীদের ফাঁসির দাবি তুললেন আইনজীবীরা
শুধু তাই নয়, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির দাবি, সাইফুলের খুনের ঘটনায় দোষীদের ফাঁসি দিতে হবে। সেইসঙ্গে কোনও আইনজীবী যাতে সাইফুলের খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের পক্ষে না লড়েন, সেজন্য সমিতির তরফে 'অনুরোধ' করা হয়। যে চট্টগ্রামের আইনজীবীরা দিনকয়েক আগেই হুমকি দিয়েছিলেন যে চিন্ময় প্রভুর হয়ে কোনও আইনজীবী দাঁড়ালে তাঁকে আদালত চত্বরেই পেটানো হবে।