চালের গোলা দিয়ে আঁকা আলপনায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী স্লোগান লেখার জন্য পুলিশের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে সরব হল চেন্নাইবাসী ও সোশ্যাল মিডিয়া।
নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে অভিনব উদ্যোগ দেখা গিয়েছে চেন্নাই শহরের বেসান্ত নগর এলাকায়। সেখানে রাস্তার উপরে আঁকা আল্পনায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ফুটে উঠেছে প্রতিবাদী স্বর। কিন্তু তার জেরে প্রতিবাদী শিল্পীদের ৫ জনকে পুলিশ আটক করার পরে শহরজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনার ঝড়, যাতে অংশগ্রহণ করেছে নেট দুনিয়াও।
‘কোলাম (আলপনা) আঁকার জন্য মামলা? আইনের কোন ধারায়? চালের গুঁড়োর অবৈধ সমাবেশের জন্য?’ সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন প্রশ্নের পাশাপাশি দেখা গিয়েছে আরও বেশ কিছু শ্লেষাত্মক বিবৃতি, যেমন, ‘আপনারা কোলামকে ভয় পাচ্ছেন? সত্যি? মহাশক্তিমান রাষ্ট্র ও কেন্দ্রীয় সরকার কোলামকে ভয় পাচ্ছে!’
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করার জন্য নবীন শিল্পীদের আটক করার কারণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একের পর এক তোপ দাগছেন চেন্নাইবাসীরা। জানা গিয়েছে, শাস্ত্রী নগর এলাকায় একটি বিয়েবাড়ির বাইরেও এমন কিছু আলপনা দেওয়ার ‘অপরাধে’ কেক জন শিল্পীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এমনকি, তাদের জন্য জামিনের আবেদন জানাতে গেলে আটক করা দুই আইনজীবীকেও।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ডিএমকে প্রধান এম কে স্তালিনও। রবিবার তিনি টুইট করেন, ‘প্রতিদিন দেশে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা বেড়ে চলেছে। চেন্নািয়ের বেসান্ত নগরে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানালে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের সাংবিধানিক ভাব প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
প্রতিবাদী এক নবীন শিল্পীর প্রশ্ন, ‘কোলাম আঁকা কি অবৈধ? আমরা তো বাড়ির বাইরে ছাড়া রাস্তার উপরেও আঁকছি। এই উদ্যোগ কী করে বেআইনি সমাগম হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে? ওদের পছন্দ না হলে যে কোনও সময় আলপনা মুথে দিতেই পারে। তা বলে এর জন্য আমাদের গ্রেফতার করা হবে কেন? ’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি, এনপিআর-এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে চলেছে। এর জেরে কিছু কিছু হিংসাত্মক ঘটনা ঘটলেও চেন্নাইয়ের প্রতিবাদের ধরণ একেবারেই শান্তিপূর্ণ। তা সত্ত্বেও পুলিশের ভূমিকা ঘিরে স্বভাবতই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।