কোটায় শিশুমৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১০৪ হলেও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের দাবি, গত ৫-৬ বছরের হিসেবে তা সবচেয়ে কম। এই মন্তব্যকে অসংবেদনশীল বলে কড়া সমালোচনা বিজেপি এবং সপার। চাপের মুখে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামলেন সনিয়া গান্ধী।
শিশুমৃত্যুর হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে কোটার হাসপাতালে। নতুন বছরের দুই দিনে আরও দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে জে কে লোন হাসপাতালে। অভিযোগ, হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশই শিশুমৃত্যুর হার বাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্য বর্ধনের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় গেহলটের।
তিনি জানিয়েছেন, ‘কিছু লোক জেনে বা না জেনে কোটার পরিস্থিতি নিয়ে দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি, গত ৫ থেকে ৬ বছরের হিসেবে বর্তমানে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে কম। এমনই ছিল আগের সুন্দর পরিস্থিতি।’
একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘কিন্তু একটি শিশুই বা কেন মারা যাবে? কেন একজন মা-ও মারা যাবেন?’
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে গেহলটের দাবি, কোটায় শিশুমৃত্যুর বিষয়ে তাঁর সরকার যথেষ্ট সংবেদনশীল। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি না করতে বিরোধী দলগুলির কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছেন।
টুইটারে তিনি জানিয়েছেন, ‘কোটার হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর হার ধীরে ধীরে কমছে। আমরা তা আরও কমানোর চেষ্টা করছি। মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য অটুট রাখাই আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।’
গেহলট যা-ই দাবি করুন, শিশুমৃত্যুর জন্য রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি এবং বহুজন সমাজ পার্টি প্রধান মায়াবতী। পাশাপাশি, এই বিষয় নিয়ে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার দিকেও আঙুল তুলেছেন বহেনজি। তাঁর দাবি, মৃত শিশুদের মায়েদের সঙ্গে যদি প্রিয়াঙ্কা দেখা না করেন, তা হলে বুঝতে হবে যে, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাত আসলে নাটক ছাড়া কিছু নয়।
এ দিকে, শিশুমৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে যোধপুরের এইমস ও কোটার সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি বিশেষ প্রতিনিধি দল পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। জে কে লোন হাসপাতালের পরিকাঠামোগত ত্রুটি সংস্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় খরচের হিসেব করতে পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য-অর্থনীতিবিদদের।
অন্য দিকে, শিশুমৃত্যু নিয়ে জনরোষের মাঝেই রাজস্থানে কংগ্রেস সভাপতি অবিনাশ পান্ডেকে ডেকে পাঠান দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি সনিয়া গান্ধী। পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের ব্যাখ্যাও দাবি করেছে হাই কম্যান্ড।
চাপের মুখে পড়ে গেহলটও টুইট করেছেন, ‘কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা চাই রাজস্থানকে ‘নিরোগ’ রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে।’