বাংলাদেশের বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তা নদী প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং দেশে চারটি হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু করেছে চিন। বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, ইউনান প্রদেশ থেকে একটি সরকারি প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টি দেখা। ইউনানের চারটি চিনা হাসপাতাল ইতোমধ্যে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে। এখন চিন বাংলাদেশে নতুন হাসপাতাল খোলার পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারও খোলা হবে, যাতে শ্রমিকদের মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। (আরও পড়ুন: ভারতে টেসলা-স্টারলিংক আসা নিয়ে জল্পনা, এরই মাঝে মাস্কের সঙ্গে আজ কথা বললেন মোদী)
আরও পড়ুন: ওয়াকফ হিংসায় ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে মালদায় কমিশন, শশী পাঁজা বললেন…
রাষ্ট্রদূত বলেন, চিনা কোম্পানিগুলো তিস্তা নদীর জল ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছে এবং এখন চিন এই প্রকল্প শুরু করতে পুরোপুরি প্রস্তুত। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, চিন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক কোনও একটি সরকার বা দলের ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং অভিন্ন স্বার্থকে কেন্দ্র করে। (আরও পড়ুন: 'ওয়াকফ তো অজুহাত মাত্র, উদ্দেশ্য কাফেরদের নির্মূল করা', বিস্ফোরক BJP MLA)
আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষের বাড়িতে তাবড় BJP নেতারা, বিয়ে নিয়ে 'বিতর্ক' প্রসঙ্গে সুকান্ত বললেন…
এরই মাঝে ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে চিন তিস্তা নদীর তীরে একটি হাসপাতাল গড়ে তুলতে চাইছে। ভারতের চিকেনস নেক করিডরের খুব কাছেই এই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হবে ১০০ একর জমিতে। এর মধ্যে নাকি একটি চিনা দল ইতিমধ্যেই ২০ একর জমি খতিয়ে দেখেছে। এদিকে সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলায় একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে চিন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলা ভারতের 'চিকেনস নেক' এলাকার সাথে সংযুক্ত। বাংলাদেশের এই লালমনিরহাট জেলা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা সংলগ্ন। এই আবহে কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত সংবেদনশীল। এহেন পরিস্থিতিতে চিনকে এই এলাকায় বিমানঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি দিয়ে ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চিন সফরে গিয়েছিলেন মহম্মদ ইউনুস। ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই সময়ই চিনকে এই বিমানঘাঁটি তৈরির অনুমতি দিয়ে এসে থাকতে পারে ইউনুস। তবে এ প্রকল্প নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার কোনো উল্লেখ সরকারি নথিতে নেই। এদিকে এই চিন সফরকালেই উত্তরপূর্ব ভারত নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
রিপোর্ট অনুযায়ী, চিন সফরে উত্তরপূর্ব ভারতের ৭ রাজ্যকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ইউনুস। তিনি নাকি বলেছিলেন, 'উত্তর-পূর্বে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনও উপায় নেই। এই অঞ্চলে আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। এটি চিনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হতে পারে।' এই মন্তব্যের মাধ্যমে কার্যত চিনকে উত্তরপূর্ব ভারতে আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে চিনা গতিবিধি বৃদ্ধি দিল্লির জন্যে মাথা ব্যথার কারণ হবে কি না, তা সময়ই বলবে।