গত ৩১ মে সীমান্ত বিষয়ক পরামর্শ ও সমন্বয়ের জন্য ওয়ার্কিং মেকানিজমের ২৪ তম বৈঠক করে ভারত ও চিন। এরপরই সীমান্ত বিবাদ মেটানো নিয়ে চিনের সদিচ্ছার অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠল আরও একবার। গতকালকের WMCC বৈঠকে ভারতীয় পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব এবং চিনা পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সীমানা ও মহাসাগর বিষয়ক বিভাগের মহাপরিচালক হং লিয়াং। এর আগে গতবছরের নভেম্বরে শেষবারের মতো WMCC বৈঠকে বসেছিল ভারত ও চিন। তবে দফায় দফায় বৈঠক হলেও চিনের তরফে সামনের দিকে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না সমস্যা মেটাতে।
এই বৈঠকের পর ভারতের বিদেশ মন্ত্রক একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ভারত বলেছে যে উভয় পক্ষ ভারত-চিন সীমান্ত এলাকার পশ্চিম সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। উভয় পক্ষ পূর্ব লাদাখের পশ্চিম সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেছে। বিদেশ মন্ত্রক আরও বলেছে যে উভয় পক্ষ ভারত-চিন সীমান্ত এলাকার পশ্চিমাঞ্চলে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ সিনিয়র কমান্ডারদের বৈঠকের পরবর্তী রাউন্ড আয়োজন করতে সম্মত হয়েছে। সামরিক পর্যায়ের সর্বশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১১ মার্চ। তবে তা থেকে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। তবে WMCC বৈঠক থেকে এটা প্রায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে চিন এই সীমান্ত বিবাদ মেটাতে আগ্রহী নয়।
সম্প্রতি একটি খবর প্রকাশ্যে আসে যে চিন প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার ৮-এর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটা দূরে একটি বড় সেতু বানাচ্ছে। এই আবহে ভারত নিজেদের অবস্থান আরও পোক্ত করতে লাদাখ সীমান্তে আরও সেনা মোতায়েন করেছে। লাদাখ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই দিকেই এখন দুই দেশের সমসংখ্যক সেনা মোতায়েন রয়েছে। চিনের আর্মরড এবং রকেট রেজিমেন্টগুলি মোতায়েন রয়েছে রুডগ ঘাঁটিতে, প্যাংগং সোর দক্ষিণে এবং অশান্ত জিনজিয়াং সামরিক অঞ্চলের জিয়াদুল্লাহতে। পিএলএ এয়ার ফোর্স ডেমচোক এবং জিনজিয়াংয়ের হোতান এয়ারবেসে তাদের যুদ্ধবিমান এবং বোমারু বিমান মোতায়েন করে রেখেছে। এই আবহে আলোচনার মাধ্যমে চিন কোনও সমাধান সূত্র বের করতে ইচ্ছুক নয়। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সমস্যা জিইয়ে রেখে পরবর্তী ছক কষছে বেজিং।