রাখঢাক করার দিনের অবসান। এবার সিধা ভাবে চিনের অপকীর্তির কথা ফাঁস করল বিদেশমন্ত্রক। মে মাস থেকেই যে সীমান্তে লোকবল বৃদ্ধি করেছিল চিন, গালওয়ানে হালে সেনা কমানোর বোঝাপড়া খেলাপ করেছে বেজিং, সেটি স্পষ্ট করে জানাল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক।
গত ১৫ জুন গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ধাপে ধাপে আলোচনার পরেও তেমন ভাবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। অন্যদিকে প্রতিদিনই সুর চড়াচ্ছে চিন। এবার পালটা দিল ভারত।
চিনের রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েদং বলেন তার দেশের ওপর দায় নয় সীমান্ত সমস্যা মেটানোর। ভারতের উচিত নিজেদের অবস্থান নমনীয় করার পরিস্থিতি শোধরানোর জন্য, বলে দায় ঝাড়েন তিনি।
এদিকে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক বলে যে মে মাস থেকেই প্রচুর সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করেছিল চিন প্রকৃত সীমান্তরেখার ওপারে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন যে এই কাজ ছিল বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, বিশেষত ১৯৯৩-এর ধারার পরিপন্থী।
সেই বোঝাপড়া অনুযায়ী এলএসিতে ন্যূনতম সেনা রাখা হবে যেমন বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে রাখা হয়। চিন সেনা বাড়ানোয় ভারতকেও সেটা করতে হয় ও এর জেরেই উত্তেজনা বাড়ে বলে জানান অনুরাগ।
এবার গালওয়ান প্রসঙ্গে, বিদেশমন্ত্রক বলে যে ৬ জুন কোর কম্যান্ডারদের আলোচনায় এটা ঠিক হয়ে গিয়েছিল যে দুপক্ষই ধাপে ধাপে ওখান থেকে সেনা সরাবে। যেটা বর্তমান পরিস্থিতি এলএসি-তে সেটা কেউ বদল করার চেষ্টা করবে না বলেই দুই দেশের মধ্যে ঠিক হয়েছিল বৈঠকে।
কিন্তু সীমান্ত ঠিক পেরিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করতে গিয়েছিল চিন। সেই কাজে বাধা দেওয়ায় গালওয়ানের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছেন অনুরাগ।
তার আগেও মে মাসের শুরু থেকে গালওয়ানে ভারতীয় সেনার টহলদারিতে বাধা দেয় চিন, বলে জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। এরপর মধ্য মে তে অন্য জায়গাতেও এলএসিতে চলতি অবস্থায় পরিবর্তন আনতে চেয়েছিল চিন, বলে জানান হয়েছে।
এই বছর চিনের যে আচরণ, সেটা উভয় পক্ষের রাজি হওয়া নিয়ম নীতির সম্পূর্ণ উলটো বলেও জানিয়েছে ভারত। গালওয়ানে ভারত বহু দিন ধরেই টহলদারি করছে বলে জানিয়েছেন অনুরাগ। গালওয়ান তাদের, চিনের এই দাবিকে খণ্ডন করতেই এই তথ্যটি তুলে ধরা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
অনুরাগ বলেন যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সম্বন্ধে সম্যক ধারনা আছে বাহিনীর তাই ভারত কখনো সেই গণ্ডি পেরোয় না। সমস্ত নির্মাণ হয় এই দিকে। কিন্তু চিন সেভাবে কাজ করে না বলেই অভিযোগ করেন তিনি।
ভারত এই মুহূর্তে প্রত্যেকটি আলোচনাতেই চিনকে বলছে ৬ জুন যেই বিষয়গুলি ঠিক করা হয়েছিল, সেগুলিকে মেনে চলতে। সেদিন গালওয়ান থেকে সমস্ত নির্মাণকার্য সরিয়ে ফেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বেজিং। সেই আশ্বাসকে সম্মান করতে বারবার চিনকে চাপ দিচ্ছে ভারত।