এবার মঙ্গলগ্রহের উদ্দেশে রওনা হল চিনের মহাকাশযান তিয়ানওয়েন-১। লাল গ্রহে প্রথম স্বাধীন অনুসন্ধান অভিযান চালাতে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ চিনের হাইনান প্রদেশের ওয়েনচ্যাং উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ১২.৪১ মিনিটে ৫ টন ওজনের মহাকাশযান নিয়ে রওনা দিয়েছে চিনের বৃহত্তম লং মার্চ-৫ রকেট।
চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম শিংহুয়া জানিয়েছে, ‘উৎক্ষেপণের ৩৬ মিনিট পরে অরবিটার ও রোভার-সহ মহাকাশ যানটি পৃথিবী-মঙ্গলগ্রহ যাত্রাপথে পৌঁছে গিয়েছে। এ ভাবেই লাল গ্রহে প্রায় ৭ মাসের অভিযান শুরু হল।’
মঙ্গল অভিযান প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘তিয়ানওয়েন-১’, ম্যান্ডারিন ভাষায় যার অর্থ, স্বর্গের উদ্দেশে প্রশ্ন। ৩৪০-২৭৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চিনের প্রাচীন কবি ক্যু ইউয়ান রচিত কবিতা অনুসারে হয়েছে অভিযানের এই নামকরণ।
এর আগে ২০১১ সালে চিনের প্রথম মঙ্গল অভিযান ‘ইয়িংঘুও-১’ ব্যর্থ হয়। কাজাখস্তান থেকে রাশিয়ার মহাকাশ যানের সাহায্যে পরিকল্পিত সেই অভিযান শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালে প্রশান্ত মহাসাগরে ভেঙে পড়ে।
এবারের অভিযান সফল হলে মঙ্গলগ্রহে আমেরিকা, ইউরোপ, রাশিয়া, ভারত এবং সব শেষে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে অনুসন্ধান অভিযাত্রীর দলে নাম লেখাবে বেজিং।
গত জুন মাসে শিংহুয়া-কে চিনের অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর গবেষক বাও ওয়েইমিন জানিয়েছিলেন, মহাকাশযানের সঙ্গে মঙ্গলগ্রহের মাটিতে ঘুরে তথ্য ও নমুনা সংগ্রহণ করতে পাঠানো হয়েছে মার্স রোভার যান। এই যান ৯০ মঙ্গল-মাস, অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে তিন মাসেরও বেশি সময় কাজ করবে।
তবে বাও জানিয়েছেন, ‘অভিযানের কঠিনতম পর্ব হল মঙ্গলগ্রহে অবতরণ করা। রোভার বহনকারী ল্যান্ডারের গতি চার ধাপে মন্থর করা হবে। এই প্রক্রিয়া ৭-৮ মিনিট ধরে চলবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ভারতের মঙ্গলগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছিল চিন। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনিইয়িং বলেছিলেন, ‘মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে ভারতীয় মহাকাশ যানের প্রবেশকে অভিনন্দন। ভারতের সঙ্গে সঙ্গে এই গর্ব গোটা এশিয়ার এবং মহাককাশে মানুষ অনুসন্ধানের অগ্রগতির উজ্জ্বল স্মারক। এই কারণে ভারতকে আমরা অভিনন্দন জানাচ্ছি।’