পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সরানোর ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই টালবাহানা করছে চিনা। দ্রুত সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য চিনকে ভারতের সঙ্গে একত্রিতভাবে কাজের পরামর্শ দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
সাংহাই কর্পোরেশন (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে মস্কোর একটি বিখ্যাত হোটেলে দু'ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়েই ফেংঘের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজনাথ। ছিলেন দু'দেশের প্রতিরক্ষা আধিকারিকরাও। গত মে মাসে সীমান্ত দ্বন্দ্ব শুরুর পর প্রথম সর্বোচ্চ পর্যায়ের মুখোমুখি বৈঠকে রাজনাথ সিং স্পষ্টভাবেই জানান, গত কয়েক মাসে পশ্চিম সেক্টরে গালওয়ান উপত্যকা-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিন যে সৈন্য সমাবেশ, আগ্রাসী পদক্ষেপ এবং একতরফাভাবে সীমান্তের অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে, তা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বিরোধী। অর্থাৎ রাশিয়ায় বসে সীমান্তে উত্তেজনার জন্য স্পষ্টতই চিনকে দায়ী করেছে ভারতীয় দল।
বেজিংকে পরামর্শ দিয়ে রাজনাথ জানিয়েছেন, বর্তমানে সীমান্তে যে পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে, তা অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণভাবে সামলানো উচিত। দু'দেশের এমন কোনও পদক্ষেপ করা উচিত নয়, যা সীমান্তবর্তী এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি করে বা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
দু'দেশের কথা বললেও প্রতিরক্ষামন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভারতের তরফে কোনও আগ্রাসী পদক্ষেপ করা হয়নি। চিন কোনও বেগড়বাই করলে তবেই জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা। রাজনাথ বলেন, 'সীমান্তের ক্ষেত্রে ভারতীয় বাহিনী সর্বদা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু একইসঙ্গে ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের সংকল্প নিয়ে কখনও যেন সন্দেহ প্রকাশ না করা হয়।'
পাশাপাশি মস্কোতেও নয়াদিল্লির আলোচনা নীতির আবারও জোর দেওয়া হয়েছে। রাজনাথ জানিয়েছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ করার জন্য দু'পক্ষকে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, 'দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও উন্নতির জন্য ভারত-চিন সীমান্তে যে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে একমত হয়েছেন দু'দেশের নেতারা। তা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত দু'পক্ষের এবং( দু'দেশের) মতভেদ যাতে বিবাদে পরিণত না হয়, তা দেখা উচিত দু'পক্ষের।'