বিগত কয়েক বছরে তাইওয়ানের ওপর চিনা রক্তচক্ষুর নজরদারি বেড়েছে। এরই মাঝে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে তাইওয়ানের। যা নিয়ে মাথা ব্যথা দেখা দিয়েছে বেজিংয়ের। তাইওয়ান 'দখল' রুখে দেওয়ার বার্তা দিয়ে সরাসরি বেজিংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন ডিসি। তবে চিনও নিজেদের 'সম্প্রসারণ নীতি'তে অনড়। এই আবহে নতুন বছরের দ্বিতীয় রবিবারই তাইওয়ানবাসীর ঘুম উড়িয়ে সামরিক মহড়া সম্পন্ন করল চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। পিএলএ-র তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার তাইওয়ানের চারপাশে যুদ্ধ মহড়া চালিয়েছে তারা। তাতে স্থলভাগে হামলা এবং সমুদ্রপথে আক্রমণের ওপর দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পিএলএ। এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে তাইওয়ানের পাশে এটা দ্বিতীয় মহড়া চিনের। (আরও পড়ুন: ফিরল ক্যাপিটল হিলের স্মৃতি, ব্রাজিলিয়ান কংগ্রেসে হামলা বলসোনারো সমর্থকদের)
পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড রবিবার গভীর রাতে এক বিবৃতি জারি করে বলেছে যে তাদের বাহিনী তাইওয়ানের আশেপাশে সমুদ্র এবং আকাশসীমায় 'যৌথ যুদ্ধ প্রস্তুতি' সম্পন্ন করেছে। সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে পিএলএ যোগ করেছে, যৌথ যুদ্ধের ক্ষমতা পরীক্ষা করা এবং 'বহিরাগত শক্তি ও তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি'র উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডকে মোকাবিলা করার লক্ষ্যে প্রস্তুত থাকাই এই মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল। প্রসঙ্গত, তাইওয়ানকে চিনা সরকার নিজেদের এলাকা বলেই দাবি করে। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে তাইওয়ান নিজেদের মতো সরকার পরিচালনা করে এসেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চিনা গৃহযুদ্ধ শেষে কমিউনিস্ট বিরোধী চিনা রাজনীতিবিদরা পালিয়ে এসেছিলেন তাইওয়ানে। তখন তাইওয়ান সরকারকে 'নির্বাসনে চিনা সরকার' বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এদিকে কমিউনিস্ট চিনের সংবিধান বলে, যেকোনও ভাবেই হোক (প্রয়োজনে যুদ্ধ) তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়তে হবে। ঐতিহাসিক এই প্রেক্ষাপটে এত দশক পর আজও সংঘাত জারি তাইওয়ান এবং বেজিংয়ের মধ্যে।
এর আগে গত মাসেই চিনের তরফে একটি যুদ্ধ মহড়া সম্পন্ন করা হয়েছিল তাইওয়ান প্রণালীতে। সেই সময় ৪৩টি চিনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। প্রসঙ্গত, বিগত দুই বছরে নিময় করে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে প্রবেশ করেছে চিনা যুদ্ধবিমান। যা নিয়ে বরাবর আপত্তি জানিয়েছে তাইওয়ান সরকার। আমেরিকাও ভাবে ভঙ্গিমায় বারবার চিনের এই আগ্রাসী মনোভাবের নিন্দা জানিয়ে এসেছে। এই আবহে গত অগস্টে তৎকালীন মার্কিন কংগ্রেস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে এসেছিলেন। যা নিয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল বেজিং। এরপর থেকেই চিনা সামরিক গতিবিধি বেড়েছে তাইওয়ান প্রণালীতে।