Nepal 100 Rupee Note: নেপালের ১০০ রুপি নোটে আঁকা ভারতীয় ভূখণ্ড, সেই টাকা ছাপাবে চিনের সংস্থা!

লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেক এবং কালাপানি - এই তিনটি স্থানকে নেপালের নয়া রাজনৈতিক মানচিত্রে সেদেশের অংশ হিসাবে দেখানো হয়েছে! যা আদতে ভারতীয় ভূখণ্ড। সেই মানচিত্রের ছবি রয়েছে নেপালের নতুন ১০০ টাকার নোটেও। যা ছাপাতে চলেছে চিনের সংস্থা।

চিনের একটি সংস্থাকে তাদের 'বিতর্কিত' ১০০ টাকার নোট ছাপার বরাত দিল ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল। নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, অর্থাৎ - 'নেপাল রাষ্ট্র ব্যাঙ্ক' (এনআরবি)-এর তরফ থেকে এই বরাত দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হল - ওই ১০০ টাকার (নেপালি রুপি) নোটে নেপালের যে 'সংশোধিত' রাজনৈতিক মানচিত্র আঁকা রয়েছে, তা নিয়েই ছড়িয়েছে বিতর্ক। কারণ, তাতে ভারতীয় ভূখণ্ডের একাংশকেও জুড়ে দেওয়া হয়েছে!

নিউজ এইটিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নেপালের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তাদের ১০০ টাকার নোটের এই পরিবর্তিত রূপ এবং নকশায় অনুমোদন দিয়েছে।

সেই নকশায় অত্যন্ত সুকৌশলে নেপালের সংশোধিত রাজৈনতিক মানচিত্রে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এই তিনটি স্থান হল - লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেক এবং কালাপানি। এই তিনটি স্থানকেই সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মানচিত্রে নেপালের অংশ হিসাবে দেখানো হয়েছে! যা আদতে ভারতীয় ভূখণ্ডের অংশ।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৮ জুন নেপালের নয়া রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ্যে আনা হয়। সেই মানচিত্রে উপরোক্ত তিনটি স্থানকে তাদের দেশের অংশ বলে দাবি করে নেপাল সরকার। তাদের বক্তব্য, রীতিমতো সংবিধান সংশোধন করে এবং দীর্ঘ এক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই মানচিত্র সংশোধনের কাজ করা হয়েছে।

যদিও ভারত ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, নেপালের এই দাবির কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। এবং তা কোনও অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ভারত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেক এবং কালাপানি ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং পশ্চিম নেপাল লাগোয়া এই স্থানগুলি আন্তর্জাতিক সীমান্তের এপারে অবস্থান করছে।

ইংরেজি দৈনিক রিপাবলিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নেপাল সরকার তাদের নতুন ১০০ টাকার নোট ছাপানোর জন্য আন্তর্জাতিকস্তরে টেন্ডার ডেকেছিল।

সেই টেন্ডার জিতেই 'চায়না ব্যাঙ্কনোট প্রিন্টিং অ্য়ান্ড মিন্টিং কর্পোরেশন' নেপালের কাছ থেকে ১০০ টাকার নোট ছাপার বরাত পেয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ইংরেজি দৈনিকে আরও দাবি করা হয়েছে, এনআরবি-র পক্ষ থেকে চিনের ওই সংস্থাকে ৩০০ কোটি নেপালি ১০০ রুপির নোট ছাপার বরাত দেওয়া হয়েছে। যার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৮৯ লক্ষ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।

সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই বিষয়ে কথা বলার জন্য নেপাল রাষ্ট্র ব্যাঙ্কের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর তরফে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কাঠমাণ্ডুর পক্ষ থেকে যখন সেদেশের নয়া রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ্যে আনা হয়, তখন থেকেই নেপালের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।

এদিকে, সম্প্রতি চিনের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে পূর্ব লাদাখে বেজিংয়ের সঙ্গে সীমান্ত সমঝোতা করেছে নয়াদিল্লি। পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ভারত ও চিন - দুই পক্ষই সমানভাবে সেনা অপসারণে রাজি হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় ভূখণ্ডকে নিজেদের বলে দাবি করা নেপালের বিতর্কিত রাজনৈতিক মানচিত্রের ছবি ও নকশা-সহ নেপালি ১০০ রুপির নোট ছাপার বরাত নিল চিনের সংস্থা!

এই ঘটনা আগামী দিনে ভারত, নেপাল ও চিনের সম্পর্কে নয়া কোনও সমীকরণ তৈরি করে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

প্রসঙ্গত, নেপালের সঙ্গে ভারতের মোট পাঁচটি রাজ্য সীমান্ত ভাগাভাগি করে নিয়েছে। ১,৮৫০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ এই সীমান্ত এলাকাগুলি রয়েছে ভারতের সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডজুড়ে।