লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি-এর মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বৃহস্পতিবার বৈঠক হয়। এই বৈঠকের পর পাঁচটি বিষয়ে দুই পক্ষ এক মত হয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু লাদাখের পরিস্থিতি এতেই শান্ত হয়ে যাবে তেমন কোনও গ্যারান্টি নেই।
তবে সূত্রের মাধ্যমে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বৈঠকে নানান চোখা প্রশ্ন করেন জয়শংকর, যার কোনও উত্তর দিতে পারেননি ওয়াং ইয়ি। বারবার চিন একই কথা বলে যাচ্ছিল যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সীমান্ত সমস্যার প্রভাব পড়া উচিত নয়। তখন জয়শংকর চিনের স্টেট কাউন্সিলরকে জিজ্ঞেস করেন যে আকসাই চিনে অত বিপুল সংখ্যক সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করে রেখেছ কেন। এই প্রশ্ন শুনতেই মুখে কুলুপ আঁটেন চিনা বিদেশমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, ওয়াং ইয়ি মেনে নেন যে আপাতত দুপক্ষের সেনাদের একে অপরের সামনে থেকে সরে আসতে হবে। তারা যাতে ধীরে ধীরে নিজেদের স্থায়ী ছাউনিতে ফিরে যান, সেই প্রক্রিয়াটি সেনা কম্যান্ডারদের সম্পন্ন করতে পারবে।
বৈঠকে জয়শংকর বলেন যে ১৯৭৬ থেকে দুই দেশের সম্পর্ক মোটের ওপর ভালো। কিন্তু হালের পরিস্থিতি সেই সম্পর্কের ওপর ছায়া ফেলেছে। চিন যে সংখ্যক সেনা জমা করেছে সেটা ১৯৯৩ ও ১৯৯৬ এর বোঝাপড়ার পরিপন্থী বলে জয়শংকর জানান। চিন যে ভাবে প্ররোচনা দিয়ে চলছে, সেটাও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও বোঝাপড়ার বিরোধী বলে বৈঠকে স্পষ্ট করা হয়। ভারত সব নিয়ম মেনে চলেছে সীমান্তে শান্তি রাখার জন্য ও চিনেরও একই নিয়ম অনুযায়ী চলা উচিত, সেটা দ্বর্থ্য়হীন ভাবে বলা হয়।
সবমিলিয়ে সীমান্ত ভালো সম্পর্ক না রাখলে যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব পড়তে বাধ্য, সেটা একেবারে স্পষ্ট করে দেন জয়শংকর। কেন সৈন্য বৃদ্ধি করেছে চিন, সদুত্তর দিতে না পারলেও সেনা কমানোর কথা বলেন ওয়াং।
মস্কোয় অবস্থিত ভারতীয় অফিসাররা স্পষ্ট করে দেন যে পাঁচটি পয়েন্টের যৌথ বিবৃতিটি হল যেসব বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়েছে। চিনের বিদেশমন্ত্রক আলাদা করে যে বিবৃতি দিয়েছে সেটা তাদের মতামত, সেটার সঙ্গে ভারত একমত নয়। এর মধ্যে যেমন সীমান্ত পরিস্থিতি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে কোনও যোগ নেই, চিনের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে ভারত।
সীমান্ত অঞ্চলে চিনের রাস্তাঘাট অনেক ভালো ভারতের তুলনায়। সেই কারণে দুই পক্ষকেই একসঙ্গে সেনা সরাতে হবে বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি, কারণ ভারত একা সেই কাজ করলে লাল ফৌজের আগ্রাসনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।