কথায় আছে ভালোবাসা সীমানা, ভাষার কোনও বাধা মানে না। এক্ষেত্রেও অনেকটা একই। সীমানা এবং ভাষাগত বাধা থাকা সত্ত্বেও এক চিনা নাগরিকের সঙ্গে ভারতীয় মহিলার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। তাঁরা একে অপরকে বিয়েও করেছেন। তবে ভাষাগত বাধা পরবর্তীতে দূর হলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল আইনি জটিলতা। অবশেষে ওই চিনা নাগরিক পেলেন ভারতের বিদেশি নাগরিকের মর্যাদা। প্রেম দিবসে তাঁকে ভারতের বিদেশি নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩ দশক পর ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া তেলেগুভাষী মহিলা
জানা গিয়েছে, এই দম্পতি দীর্ঘ ৯ বছর ধরে আমদাবাদে বসবাস করছে। এবার ওই চিনা ব্যক্তি তাঁর ভারতীয় স্ত্রীর সঙ্গে আমদাবাদে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩২ বছর বয়সি চিনা নাগরিকের নাম মা হাই গুও। তিনি তাঁর চেয়ে ১৩ বছরের বড় ৪৫ বছর বয়সি পল্লবী গৌতমের প্রেমে পড়েছিলেন। জানা যায়, ২০১৬ সালে ভেলোরে একটি অনুষ্ঠানের সময় আমদাবাদের বাসিন্দা পল্লবীর সঙ্গে প্রথম দেখা হয় চিনের সিচুয়ান প্রদেশের নান চং শহরের গুওর সঙ্গে। প্রথম দেখাতেই তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে যান। আর তারপরেই ওই বছর বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এই দম্পতি ৯ বছর ধরে বিবাহিত। বর্তমানে তাঁদের দুই বছরের একটি মেয়ে আছে। তার নাম মা এনজি। মা এনজি অর্থ হল ‘শান্তিপূর্ণ’। এই দম্পতি শুধু একে অপরের সংস্কৃতিকেই গ্রহণ করেননি, তাদের মেয়েও চারটি ভাষায় বলতে পারে। সে গুজরাটি, ম্যান্ডারিন, ইংরেজি এবং হিন্দি ভাষায় কথা বলতে পারে।
পল্লবী গৌতম জানান, বিয়ের পর তিনি প্রথমে চিনে স্থায়ীভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কারণ তিনি ভয় পেয়েছিলেন যে তাঁর স্বামী এখানকার খাবার এবং জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন না। তবে তাঁর স্বামীও ধীরে ধীরে আমদাবাদের প্রেমে পড়েন এবং ভারতে স্থায়ীভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। গুও জানান, যে তিনি ভারতে কখনও হয়রানি বা বৈষম্যের সম্মুখীন হননি। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে কখনও কোনও ধরণের হয়রানি বা বৈষম্যের সম্মুখীন হইনি। ভাষার বাধা থাকলেও ভালোবাসার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। আমি যেভাবে মানুষের সঙ্গে মিশি তারাও ঠিক একইভাবে আমার সঙ্গে মেশেন।’ তিনি তাঁর প্রতিবেশীদের গুজরাটি ভাষায় শুভেচ্ছা জানাতে বেশ ভালোই উপভোগ করেন।
তিনি বলেন, যখন তিনি প্রথমবার আমদাবাদে আসেন, তখন তাঁর মশলাদার খাবার খেতে সমস্যা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘আমি জিভে খাবার ছুঁতে পারতাম না। এটা আমার কাছে মোটেও সুস্বাদু ছিল না। তবে ধীরে ধীরে আমি খেতে শুরু করি এবং গুজরাটি খাবার ও মশলাদার ভারতীয় খাবার পছন্দ করতে শুরু করি। চিনে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার সময় আমি এখানকার খাবারের প্যাকেট সঙ্গে নিয়ে যায়।’ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই দম্পতি প্রতি বছর চিনে যান। তাঁরা দুজনেই সেখানে তা উপভোগ করেন।