আর পাঁচটা বিয়ের মতো সাধারণ নয় এই বিয়ে। এই বিয়েতেই ব্যান্ড বাজা বারাত তো ছিলই, তার পাশাপাশি ছিল পাঁচজন চিকিত্সক ও বেশকয়েকজন প্যারামেডিক্যাল স্টাফের একটি দল! ভাবছেন বিয়েতে এদের কী কাজ? পুরোহিতের জায়গা চিকিত্সকরা কী করছেন? আসলে ছবিতে সবুজ-মেরুন লেহেঙ্গা-চোলিতে যে কনেকে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন তিনি চিনের বাসিন্দা।
করোনা আতঙ্কের মাঝেই রবিবার মধ্যপ্রেদেশের ছোট্ট শহর মন্দাসুরের সত্যার্থ মিশ্রার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন চিনের পাত্রী জিহাও ওয়াং। উপস্থিত ছিল জিহাওয়ের পরিবারে সদস্যরাও। তাই মধ্যপ্রদেশ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরাও এদিনেই বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন কর্মব্যস্ত।
করোনাভাইরাসে ইতিমধ্যেই ৩০০-র বেশি প্রাণ কেড়েছে চিনে। আক্রান্তের সংখ্যা চোদ্দ হাজার পার করেছে। আগেই করোনাভাইরাস সংক্রমণকে ‘আন্তর্জাতিক উদ্বেগ উত্পন্নকারী স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা’ বলে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO)।
বুধবার বিয়ের জন্য মন্দাসরে হাজির হন জিহাও ওয়াং ও তাঁর পরিবার। এর পর থেকেই মধ্যপ্রদেশ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা নিয়মিত পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছেন তাদের। এদিন মন্দাসুর জেলা হাসাপাতালের সিভিল সার্জন ডাঃ একে মিশ্রা জানান, পাঁচ-ছ’জন ডাক্তার এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফরা প্রতিদিন তাঁদের পরীক্ষা করছেন। তাঁদের মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনওরকম উপসর্গ দেখা যায়নি। যদি কিছু খটকা লাগে সেই মুহূর্তে তাঁদের হাসাপাতালে ভর্তি করা হবে। আমরা সব পরিস্থিতির জন্য তৈরি’।
তিনি জানান, পাত্রীপক্ষ তাদের সঙ্গে পূর্ন সহযোগিতা করছে এমনকি তাঁরা মধ্যপ্রদেশ স্বাস্থ্য দফতরের এই উদ্যোগের সাধুবাদ জানিয়েছেন।
রবিবারই সাময়িকভাবে চিনের নাগরিক বা সে দেশে থেকে ভারতে আসতে যাওয়া কোনও ব্যক্তির ই-ভিসার আবেদন গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। চিনের পাশাপাশি ভারত সহ বিশ্বের ২৫ দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলেছে।
জিহাও ওয়াং ও সত্যার্থ মিশ্রার পরিচয় পাঁচ বছর আগে কানাডায়। সেইসময়ই ওখানেই পড়াশোনা করতেন দুজনে। এরপর পাঁচবছর প্রেম সম্পর্কে থাকার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। জিহাও-এর বাবা শিবু ওয়াং, মা জিন গুয়ান এবং অপর দুই আত্মীয় এই বিয়েতে যোগ দেন। করোনা আতঙ্কের জেরে ভিসা সমস্যা দেখা দেওয়ায় বাকি চার আত্মীয় ভারতে আসতে পারেননি। ভারতের বেশ কিছু জায়গা ঘুরে ২৯ জানুয়ারি মন্দাসুরে এসে পৌঁছায় জিহাও ও তাঁর পরিবার। চিনে ফেরার আগে ভারতের আরও বেশ কিছু জায়গা পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। জিহাও জানিয়েছেন, আমরা জানি কেন এই পরীক্ষাগুলো চলছে। আমার শহরে যদিও এখন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েনি। তবুও আমাদের কোনও সমস্যা নেই’।