গত প্রায় ২ মাস ধরে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে জেলে দিন কাটছে বাংলাদেশি হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর। এই আবহে কয়েকদিন আগেই চট্টগ্রাম দায়রা আদালতে চিন্ময় প্রভুর জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। তবে সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। এই আবহে ঢাকা হাই কোর্টে চিন্ময় প্রভুর জামিনের আবেদন করা হয়। তবে ২০ তারিখ সেই মামলাটি তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর তা শুনানির জন্যে ওঠেনি। শুনানির তালিকায় মামলার সিরিয়াল অনেক পিছনে ছিল বলে জানিয়েছেন চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী। তাহলে এর পরে কবেহতে পারে এই শুনানি? আইনজীবী সুমনকুমার রায় জানান, আগামী সপ্তাহে যাতে শুনানি হয়, তার জন্যে চেষ্টা করা হবে। (আরও পড়ুন: বিচারক মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে ঠিক করেছেন,মত একদা আরজি কর মামলায় লড়া আইনজীবী বিকাশের)
আরও পড়ুন: আরজি কর নির্দেশনামায় পুলিশ ও সন্দীপকে নিয়ে পর্যবেক্ষণ, একাধিক প্রশ্ন বিচারকের
এর আগে চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় প্রভুর মামলায় লড়তে গিয়ে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল হিন্দু আইনজীবীদের। তবে সব প্রতিকূলত পার কে গত ২ জানুয়ারি অবশেষে ঢাকা থেকে যাওয়া হিন্দু আইনজীবীরা চিন্ময় প্রভুর হয়ে জামিনের শুনানিতে মামলা লড়েন। তবে আদালত চিন্ময় প্রভুর জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছিল। এর আগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ চট্টগ্রামে গিয়ে চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করার চেষ্টা করেছিলেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। তবে তিনি সেখানে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন। পরে অপূর্বকুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১১ জন আইনজীবী চট্টগ্রাম আদালতে গিয়ে চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করেছিলেন। সেখানে জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ায় তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। (আরও পড়ুন: 'একা' হলেন মাস্ক, ট্রাম্পের মনোনীত DOGE কো-চেয়ারম্যানের পদে থাকবেন না রামাস্বামী)
আরও পড়ুন: পানামা খাল 'ফিরিয়ে নেব', ওভাল অফিসে ঢুকেই দাবি মার্কন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের
প্রসঙ্গত, গত ২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। (আরও পড়ুন: 'দুই দেশের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে...', বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে বিস্ফোরক মমতা)
এদিকে ২৬ নভেম্বরের সেই সংঘর্ষে এক আইনজীবী খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় অন্তত ১০ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চট্টগ্রাম বারের ৬০ জন হিন্দু আইনজীবীর বিরুদ্ধে আইনজীবী সাইফুল হত্যার মামলায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। অনেককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। তবে এর মধ্যে অনেকেই চট্টগ্রাম আদালতে স্বাভাবিক ভাবেই প্র্যাক্টিস করছেন। তবে সাহস করে কেউ আর চিন্ময় প্রভুর হয়ে মামলা লড়তে সম্মত হননি।