Chinmay Krishna Prabhu Latest Update: চিন্ময় প্রভুকে কি রীতিমতো 'ভয়' পাচ্ছে ইউনুস সরকার? তাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে...

পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভুঁইয়া বলেন, 'প্রায় ৩০ মিনিট উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।'

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের বিরোধিতা করে ইউনুস সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে গতকাল বলা হয়েছিল, 'চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে জামিন দিলে অরাজকতা দেখা দেবে'। এই বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভুঁইয়া বাংলাদেশের ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ৩০ মিনিট উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।' এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, এক চিন্ময় প্রভুকে 'ভয়' পাচ্ছে ইউনুসের প্রশাসন? উল্লেখ্য, বাংলাদেশে একের পর এক সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বিগত দিনে। তবে হিন্দু সন্ন্যাসীকে জামিন দেওয়া হল না। (

সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, 'চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব জড়িত রয়েছে। আমরা যুক্তি দিয়েছিলাম যে তিনি যদি জামিন পান, তবে অরাজকতার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আমরা অতীতেও এমনটা দেখেছি। তিনি হাজার হাজার সমর্থককে বিক্ষোভের জন্য ডেকে আদালত প্রাঙ্গণে উস্কে দিয়েছিলেন। তাই তিনি জামিনের অপব্যবহার করতে পারেন বলে আমরা তাঁর আবেদনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি।' (

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালতে অনুষ্ঠিত হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি। এর আগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের শুনানি মামলায় কোনও আইনজীবীই সওয়াল করতে পারেননি তাঁর হয়ে। তবে ২ জানুয়ারি অন্তত শুনানিটা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে, আজও আদালতে বিশৃঙ্খলা ছিল। আদালতে 'ইসকন বিরোধী' স্লোগান উঠেছিল। এদিকে আদালতের তরফ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হয়, যে মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভু গ্রেফতার হয়েছেন, তাতে যাবজ্জীবনের সাজা হয়। (

উল্লেখ্য, আজ চট্টগ্রামের আদালতে জামিনের শুনানিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবীর একটি দল সওয়াল করেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের হয়ে। এর আগের দিন রবীন্দ্র ঘোষ চট্টগ্রামে গিয়ে চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করার চেষ্টা করলেও হেনস্থার শিকার হয়েছিল। সেই জায়গায় আজ অপূর্বকুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে এই ১১ জন আইনজীবী গিয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করতে। এর আগে চট্টগ্রাম বারের ৬০ জন হিন্দু আইনজীবীর বিরুদ্ধে সাইফুল হত্যার মামলায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। অনেককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। তবে এর মধ্যে অনেকেই চট্টগ্রাম আদালতে স্বাভাবিক ভাবেই প্র্যাক্টিস করছেন। তবে সাহস করে কেউ আর চিন্ময় প্রভুর হয়ে মামলা লড়তে সম্মত হননি। অভিযোগ, এই আইনজীবীদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। যদিও বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছিল। (

প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এই সংঘর্ষে এক আইনজীবী খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় অন্তত ১০ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।