চিন্ময় কৃষ্ণদাসের জামিন মামলার শুনানিই হল না আজ। কারণ চট্টগ্রাম আদালতে আজ কোনও আইনজীবীই আসেননি। সেই পরিস্থিতিতে আগামী ২ জানুয়ারি হিন্দু সন্ন্যাসী তথা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রের জামিনের মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, প্রাণভয়ে চিন্ময় প্রভুর হয়ে কোনও আইনজীবী সওয়াল করতে আসেননি। আদালতে এলে তাঁদের উপরে হামলা চালানো হতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন চিন্ময় প্রভুর এক আইনজীবী। এমনকী ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র রাধারমণ দাস দাবি করেছেন যে চিন্ময় প্রভুর আইনজীবীর উপরে মৌলবাদীরা হামলা চালিয়েছে। তার জেরে আইসিইউতে ভরতি আছেন তিনি। আর সেই পরিস্থিতিতে নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কোনও আইনজীবী আজ চট্টগ্রাম আদালতে আসেননি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
‘ন্যায়বিচারের অংশ', দাবি সরকারি আইনজীবীর
এমনিতে আজ চট্টগ্রাম আদালতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। কড়া নিরাপত্তারও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। তারইমধ্যে বিক্ষোভ মিছিল করেন আইনজীবীরা। পরবর্তীতেও বিক্ষোভ চলতে থাকে। তারইমধ্যে সরকারি আইনজীবীরা দাবি করেন, আজ আদালতে যা হল, তা থেকে প্রমাণিত হল যে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার আছে। চিন্ময় প্রভুকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়ার জন্যই শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হল। এটাই ‘ন্যায়বিচারের অংশ’ বলে দাবি করেন সরকারি আইনজীবীরা।
চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারি ও জামিনের মামলার ইতিবৃত্ত
১) গত ২৫ অক্টোবর একটি জনসভা হয়েছিল চট্টগ্রামে। সেটার প্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবরে ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রুজু করা হয়েছিল। সেই তালিকায় চিন্ময় প্রভুর নামও ছিল।
২) ২৫ নভেম্বর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রকে গ্রেফতার করা হয়।
৩) ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় প্রভুকে চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সেদিন তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল চট্টগ্রাম আদালত।
যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টারা দাবি করেছেন যে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে ভুয়ো প্রচার করা হচ্ছে। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেটা সার্বিক চিত্র নয়। সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে একটি সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখ্য প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, অনলাইনের দুনিয়ায় কৃত্রিমভাবে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রেসংঘের বাহিনী পাঠানোর দাবি মমতার
তারইমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা দরকার। সেইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যে ভারতীয়রা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের এই রাজ্যে ঠাঁই দিতে তৈরি আছেন। তাঁদের খাদ্যের কোনও অসুবিধা হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।