তাঁদের অধীনে থাকা যেসমস্ত স্কুলগুলি 'ডামি' বা ভুয়ো ছাত্রছাত্রীদের নথিভুক্ত করেছে, সেইসব স্কুলের বিরুদ্ধে কঠোরতম পদক্ষেপ করা হবে। শীঘ্রই এইসব স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে 'কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এক্সামিনেশনস' (সিআইএসসিই) কর্তৃপক্ষ। বুধবার এই বিষয়টি নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসে মুখ খোলেন সিআইএসসিই-র চিফ এক্সিকিউটিভ তথা সচিব ড. জোসেফ ইম্যানুয়েল।
তিনি বলেন, 'ডামি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, এই স্কুলগুলি কোনওভাবেই পড়ুয়াদের মঙ্গল করতে পারে না। এই সমস্ত স্কুলগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা কাউন্সিলের এজেন্ডাগুলির মধ্যে অন্যতম।...'
'...পড়ুয়াদের দিক থেকে দেখতে গেলে, বলতে হয়, ডামি স্কুল কখনই তাদের জন্য ভালো নয়। বাচ্চাদের অবশ্যই সম্পূর্ণ রূপে একটি স্কুলের পঠনপাঠনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া দরকার। যা সামগ্রিকভাবে তাদের উন্নতি করবে এবং তাদের ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলবে। যেভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো ডামি স্কুল গজাচ্ছে, তাতে সুদূর ভবিষ্যতে পড়ুয়াদের ক্ষতিই হবে।'
এছাড়া, তাদের স্কুলের পড়ুয়ারা যাতে মেধা তালিকায় স্থান পেতে পারে, তার জন্যই কিছু স্কুল, অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন পরীক্ষায় পড়ুয়াদের বেশি করে নম্বর দিচ্ছে। এইসব স্কুলগুলিকে শীঘ্রই সমস্যায় পড়তে হবে।
কারণ, সিআইএসসিই শীঘ্রই এই সমস্ত স্কুলগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে। প্রসঙ্গত, সিআইএসসিই কর্তৃপক্ষই এই সমস্ত স্কুলে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জোসেফ বলেন, 'কিছু স্কুল এই কাজ করছে, যাতে তাদের পড়ুয়ারা মেধাতালিকায় থাকতে পারে। এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা, কাউন্সিলে এই সমস্যা নিয়ে কাজ করছি এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।...'
তিনি আরও জানান, '...আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং সেখানকার শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি পালন করব, যাতে তাঁরা তাঁদের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাগুলিতে পড়ুয়াদের ন্যায্য মূল্যায়ন করেন।...'
'...কাউন্সিলের পক্ষ থেকে যে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল, তার একটিই উদ্দেশ্য ছিল। যাতে বোর্ড পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থী বা পড়ুয়ারা যেকোনও ধরনের মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারে। কিন্তু, পরবর্তীতে দেখা গিয়েছে, এই ধরনের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ ন্যায্য পন্থা অবলম্বন করছে না। তারা পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত নম্বর দিচ্ছে।...'
'...ফেব্রুয়ারিতে তাড়াতাড়ি শুরু হওয়া সত্ত্বেও, কেন এপ্রিল মাসেও বোর্ড পরীক্ষা চলছে? উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আগামী বছর দ্বাদশ শ্রেণির (আইএসসি) পরীক্ষা ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৫ এপ্রিল শেষ হবে এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নির্ধারিত দশম শ্রেণির (আইসিএসই) পরীক্ষা শুরু হয়ে তা ২৭ মার্চ শেষ হবে।'
একটি প্রশ্নের জবাব তিনি আরও জানান, ‘আমরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য অজস্র বিষয় নিয়ে এসেছি। তাই আমাদের আরও বেশি সময় দরকার।’
অনেকেই মনে করেন অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলির নিরিখে সিবিএসই-র পাঠক্রম অনেক বেশি সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জোসেফ বলেন, 'এটি একটি মিথ। আপনি যদি শতাংশের হিসাবে দেখেন, তাহলে আপনিও বুঝতে পারবেন, যে কোনও ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সিআইএসসিই-র পড়ুয়ারা অনেক বেশি সংখ্যায় সফল হচ্ছে। কিন্তু, মোট সংখ্যার হিসাবে সিবিএসই-র ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। কারণ, সারা দেশে সিআইএসসিই আওতাধীন স্কুলের তুলনায় সিবিএসই আওতাধীন স্কুলের সংখ্যা অনেক বেশি।'