নাম নেই। পরিচয় নেই। সেসব ছাড়াই কলেজকে নগদ প্রায় ১.৩৫ কোটি টাকা অনুদান পাঠালেন এক ব্যক্তি। গত সেপ্টেম্বরে একটি ভারী বড় পার্সেল পান নিউইয়র্ক সিটি কলেজের অধ্যাপক বিনোদ মেনন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রধানের উদ্দেশে বাক্সটি মেল করা হয়েছিল। আসলে সেই ২০২০ সালের নভেম্বরেই ফ্লোরিডার পেনসাকোলা থেকে মার্কিন ডাকবিভাগের মাধ্যমে পার্সেলটি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে করোনা তুঙ্গে। লকডাউনে বাড়ি থেকে ক্লাস নিচ্ছিলেন অধ্যাপকরা। ফলে ৯ মাস ধরে ক্যাম্পাসের মেল রুমেই পড়ে ছিল সেই বিপুল টাকা ভর্তি বাক্স।
'বাক্সে কোনও নামই নেই। খালি ভিতরে একটা চিঠি ছিল। তাতে লেখা, সিটি কলেজ আমার জীবনে সিটি কলেজের অবদান অনস্বীকার্য। সেই কৃতজ্ঞতা থেকেই আমি কলেজকে পাল্টা কিছু দিতে চাই,' জানালেন বিনোদ মেনন। চিঠির তলাতেই প্লাস্টিকে মোড়ানো কিছু দেখেই চমকে যান অধ্যাপক।
মেনন বলেন, 'আমি তো মোড়কটি খুলতেই হতবাক! ভিতরে শুধুই টাকা আর টাকা। সিনেমা ছাড়া আমার জীবনে এত নগদ টাকা কখনও দেখিনি।'
মোট ১,৮০,০০০ মার্কিন ডলার। পুরোটাই ক্যাশ। কলেজের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা থেকে এই টাকা পাঠিয়েছেন অজ্ঞাতপরিচয় ও নিঃসন্দেহে বিপুলভাবে সফল কোনও প্রাক্তনী।
সাফল্যেই ইতিহাস অবশ্য সিটি কলেজ অব নিউ ইয়র্কের নতুন নয়। এই কলেজেরই ১৩ জন প্রাক্তনী এখনও পর্যন্ত নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। তার মধ্যে ৩ জন পদার্থবিদ্যা বিভাগের।
বিনোদ জানান, এরকম অদ্ভুত কান্ডে তিনি হকচকিয়ে যান। প্রথমেই তাঁর ভয় হতে শুরু করে। তিনি বলেন, 'তখন কলেজে কেউ ছিল না। ভয়ে আমি বাক্সটা বন্ধ করে জড়িয়ে ধরে বসে ছিলাম। ফোন করে কলেজের ডিনকে ডেকে পাঠালাম।'
এই বিপুল অনুদানের খবরে কলেজের সবাই আনন্দিত হয়ে যায়। কিন্তু অনুদানটি বৈধ কিনা তা নিশ্চিত করার প্রয়োজন ছিল। টাকাটি কোনও অসত্ উপায়ে পাঠানো কিনা, তা যাচাই করে এফবিআই। জানা যায় সেরকম কোনও ব্যাপার নেই। এরপরেই টাকাটি কলেজের বৃত্তির ফান্ডে জমা করা হয়। আগামিদিনে পদার্থবিদ্যার পড়ুয়াদের বৃত্তি প্রদানে এই টাকা ব্যবহৃত হবে।