বিচার বিভাগের স্বাধীন ভাবে কাজ করার অর্থ এই নয় যে সবসময় সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিতে হবে। সোমবার এমনটাই বললেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, 'সরকারের প্রধানদের সঙ্গে বিচারপতিদের বৈঠক মানেই, কোনও বোঝাপড়া হচ্ছে, এমনটা নয়।' ক'দিন আগেই তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তা নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আমার বাড়িতে এসেছিলেন। আমি মনে করি, এতে কোথাও, কোনও ভুল ছিল না।' উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গ্রুপ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেই জাস্টিস চন্দ্রচূড় আরও বলেন, বর্তমানে ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে অনেক গোষ্ঠী। এভাবে তারা চাইছে যাতে তাদের অনুকূল রায় দেয় আদালত। (আরও পড়ুন: মন্দিরে খলিস্তানি হামলার প্রতিবাদ, কানাডায় বিক্ষুব্ধ হিন্দুদের জনজোয়ার)
আরও পড়ুন: লাদাখে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে নতুন করে মুখ খুলল চিন, ভারতের টহল নিয়ে প্রশ্ন হতেই…
জাস্টিস চন্দ্রচূড়ের কথায়, 'নির্বাহী বিভাগের থেকে স্বাধীনতাকেই ঐতিহ্যগতভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হত। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মানে এখন সরকারের থেকে স্বাধীনতা। কিন্তু বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে এটাই এটাই একমাত্র বিষয় নয়। আমাদের সমাজ বদলে গিয়েছে। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ার আবির্ভাবের সাথে এই পরিবর্তন এসেছে। আপনি আজকাল বেশ কিছু গোষ্ঠী দেখতে পাবেন। তারা ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করার চেষ্টা করে যাতে রায় তাদের অনুকূলে যায়।' (আরও পড়ুন: কমলা না ট্রাম্প, এগিয়ে কে? মার্কিন নির্বাচনের আগে সর্বশেষ সমীক্ষাগুলি কী বলছে?)
আরও পড়ুন: কিঞ্জলের শ্বশুরের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ, মামলার বিশদ জানাল অ্যাসোসিয়েশন
এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গণেশ পুজোর সময় যে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে জাস্টিস চন্দ্রচূড় বলেন, 'আমি যে মামলা শুনছি, তার সঙ্গে এই ধরনের সাক্ষাতের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা তো সামাজিক বিষয়। এটা আমার ব্যক্তিতগ জীবনের বিষয়।' তাঁর কথায়, 'প্রধানমন্ত্রী আমার বাড়িতে এসেছিলেন। আমার মনে হয় এতে দোষের কিছু নেই। কারণ বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে এমনকি সামাজিক পর্যায়েও নিরন্তর বৈঠক চলছে। আমরা রাষ্ট্রপতি ভবন, প্রজাতন্ত্র দিবস ইত্যাদিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাই। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলি, এই কথোপকথন ব্যক্তিগত।' (আরও পড়ুন: 'ফাঁসিয়েছে সরকার,চুপ করিয়েছে ডিপার্টমেন্ট', সঞ্জয়ের দাবি নিয়ে কী বললেন ডাক্তাররা)
আরও পড়ুন: 'আরজি করের নির্যাতিতার দেহ থেকে পাওয়া সাদা তরলের DNA পরীক্ষার রিপোর্ট কী বলছে?'
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে জাস্টিস চন্দ্রচূড়ের বক্তব্য, 'স্বাধীন হতে হলে একজন বিচারপতিকে তাঁর বিবেকের কথা শুনতে হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে। আর একজন বিচারপতির বিবেক আইন ও সংবিধান দ্বারা পরিচালিত হয়। এতে কোনও সন্দেহ নেই। যখন রায় সরকারের বিরুদ্ধে আসে এবং নির্বাচনী বন্ড স্কিম বাতিল হয়, তখন একটা পক্ষ বলে, বিচার বিভাগ খুবই স্বাধীন। কিন্তু রায় সরকারের পক্ষে গেলে, বলা হয়, বিচার বিভাগ আর স্বাধীন নয়। এটা আমার স্বাধীনতার সংজ্ঞা নয়।'