দুর্গাপুজোর চাঁদা দেওয়ার ঘটনা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ত্রিপুরার কদমতলা। জ্বলল আগুন। অভিযোগ উঠেছে যে রবিবার সন্ধ্যা-রাতের দিকে একাধিক দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। করা হয় ভাঙচুর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ষষ্ঠীর সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারার (অতীতের ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারার মতো) আওতায় বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। তারইমধ্যে কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণ দাবি করেছেন যে পুলিশের গুলিতে একজনের মৃৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। যদিও সেই বিষয়টি নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুর্গাপুজোর চাঁদা নিয়ে রবিবার সেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। উদ্যোক্তারা যে দাবি করেন, সেইমতো চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। আর তা নিয়েই সংঘর্ষ শুরু হয়। ভাঙচুর চালানো হয় একাধিক দোকানে। ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ এবং ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসকে।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2024: দশভূজার হাতে ১০ অস্ত্র, কোন অস্ত্র কে কেন দিয়েছিলেন মাকে? কী বলছে শাস্ত্র?
বিধিনিষেধ জারি কদমতলায়
সেই পরিস্থিতিতে ষষ্ঠীর সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা বলবৎ করা হয়েছে। উত্তর ত্রিপুরার ধরমনগরের কদমতলা থানা এলাকায় সেই বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচজন বা তার বেশি লোকজনের জমায়েত করতে পারবেন না। করা যাবে না জনসভা। রাস্তায় একসঙ্গে দুটির বেশি গাড়ি বা বাইক চলাচল করতে পারবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। বিধিনিষেধের আওতায় রাখা হয়নি সরকারি অফিস, বেসরকারি অফিস, স্বাস্থ্য পরিষেবা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিয়েবাড়ি, জন্মদিনের অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে। স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্যকে বিধিনিষেধের আওতার রাখা হয়েছে।
বিজেপি সরকারকে আক্রমণ কংগ্রেস বিধায়কের
তারইমধ্যে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ। সেইসঙ্গে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘উদাসীনতা এবং নির্লজ্জতার একটা সীমা আছে। কদমতলা বাজারে যখন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ (চলছে) এবং পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন অনেকে, তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আগরতলা শহরে রাত পর্যন্ত দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল উদ্বোধনে ব্যস্ত থাকেন।’
যদিও বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। মুখ খোলেননি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাও। সোশ্যাল মিডিয়াতেও কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।