Places of Worship Act নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানালেন সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস।সেই সঙ্গেই অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য খলিদ রাশিদ ফারাঙ্গি মাহালি জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশকে স্বাগত। গোটা রাজ্য নয়, গোটা দেশের কাছে এটা স্বস্তির। তাদের উপাসনাস্থলের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে বিশেষত মুসলিমরা অত্যন্ত অস্থির ছিলেন। আমাদের আশা আদালত চূড়ান্ত রায়ে এই আইন প্রয়োগে কঠোর হবে। আগামীতে আর কোনও বিতর্ক থাকবে না। এটা আগামীতে দেশের স্বার্থে খুব দরকার।
অল ইন্ডিয়া শিয়া পার্সোনাল ল বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারি মৌলানা ইয়াসুব আব্বাস জানিয়েছেন, এটা দেশের অবস্থার উন্নতির জন্য খুব দরকার। এতে দেশে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছিল।
সমাজবাদী পার্টিরনেতা রাজেন্দ্র চৌধুরী বলেন, এটাকে স্বাগত। বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।
উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা অজয় রাই বলেন, এতে দেশে ভ্রাতৃত্ব ও শান্তি বজায় থাকবে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে।
১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইনের বিরুদ্ধে দায়ের করা পিটিশনগুলির শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে এই আবেদনগুলির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দেশে এই আইনে কোনও নতুন মামলা দায়ের করা যাবে না। অর্থাৎ মসজিদের বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো মামলা করা হবে না। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে এই আইনের কিছু ধারাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা পিটিশনের বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রকে এই পিটিশনের জবাব দিতে বলেছে আদালত।
কেন্দ্রের তরফে এই পিটিশনের জবাব দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলিকে জবাব দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। শীর্ষ আদালত এই কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ চেয়ে মুসলিম সংগঠন সহ বিভিন্ন পক্ষের দায়ের করা আবেদনও মঞ্জুর করেছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনও আদালতে সমীক্ষার জন্য নতুন করে মামলা দায়ের বা নথিভুক্ত করা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিচারাধীন মামলায় আদালত কোনো কার্যকর, অন্তর্বর্তীকালীন বা চূড়ান্ত আদেশ দেবে না।
বিষয়টি কী?
১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সংশ্লিষ্ট আইনে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট বিদ্যমান উপাসনালয়গুলোর ধর্মীয় চরিত্র সেদিন যেমন ছিল তেমনই থাকবে। এটি কোনও ধর্মীয় স্থানের প্রকৃতি পুনরুদ্ধার বা পরিবর্তনের জন্য মামলা দায়ের নিষিদ্ধ করে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন। মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আর মামলা করা যাবে না।
এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতে বেশ কয়েকটি পিটিশন বিচারাধীন রয়েছে, যার মধ্যে একটি অশ্বিনী উপাধ্যায় দায়ের করেছেন। ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল (বিশেষ বিধান) আইনের ২, ৩ ও ৪ নম্বর ধারা বাতিল করার আর্জি জানিয়েছেন উপাধ্যায়।
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী তথা মহারাষ্ট্রের বিধায়ক জিতেন্দ্র সতীশ আওহাদও ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল (বিশেষ বিধান) আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বেশ কয়েকটি বিচারাধীন পিটিশনের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দাখিল করেছেন।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ, মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ এবং সম্ভলের শাহি জামা মসজিদ সহ বিভিন্ন আদালতে দায়ের হওয়া একাধিক মামলার প্রেক্ষাপটে এই মামলার শুনানি হবে। মামলায় দাবি করা হয়েছে যে স্থানগুলি প্রাচীন মন্দিরগুলি ধ্বংস করে নির্মিত হয়েছিল এবং হিন্দুদের সেখানে প্রার্থনা করার অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এসব মামলার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মুসলিম পক্ষ ১৯৯১ সালের আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, এ ধরনের মামলা গ্রহণযোগ্য নয়। রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর দায়ের করা একটি সহ ছয়টি পিটিশন এই আইনের বিভিন্ন ধারার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে। বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদের উপর হিন্দুদের দাবি জানাতে সুপ্রিম কোর্টের কিছু বিধানের পুনর্ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিলেন স্বামী, উপাধ্যায় দাবি করেছিলেন যে পুরো আইনটি অসাংবিধানিক এবং এর পুনর্ব্যাখ্যা করার কোনও প্রশ্নই নেই।
(ইনপুট এজেন্সি)