সম্প্রতি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বিজেপিকে নিয়ে ভবিষ্যদ্বানী করেছেন। রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতি তা নিয়ে উত্তাল হয়েছে। তিনি এখন তৃণমূল কংগ্রেসের পরামর্শদাতা। তাঁর স্ট্র্যাটেজির উপর ভর করে একুশের নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সঙ্গে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজও ছিল। সেখানে প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘হারুক বা জিতুক। মোদী থাকুক বা নাই থাকুক। আগামী কয়েক দশক বিজেপিকে হারানো কঠিন।’
এই মন্তব্য বা ভবিষ্যদ্বানী আসমুদ্র হিমাচলকে আন্দোলিত করে তুলেছে। উত্তাল হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। গুঞ্জন শুরু হয়, তাহলে কী তৃণমূল কংগ্রেস থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন পিকে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পিকে’র মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। তখন তিনি বলেন, ‘প্রশান্ত কিশোরের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। উনি আসলে বলতে চেয়েছেন, কংগ্রেসের মতো একা একা নয়, বিজেপিকে হারাতে গেলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে। তবেই বিজেপিকে হারানো যাবে। আমিও চাই না গোয়ায় ভোট ভাগাভাগি হোক।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে উত্তাল হয়ে ওঠা রাজনীতি খানিকটা স্তিমিত হলেও অন্য একটি বার্তা তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ আজ এখানে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী আসছেন। তার আগে জোটের বার্তাই দিয়ে রাখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে সরাতে কংগ্রেসকে এগিয়ে আসতে হবে এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে হবে—এই বার্তাই দিতে চাইলেন তৃণমূল সুপ্রিমো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
ঠিক কী বলেছিলেন প্রশান্ত কিশোর? প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘হারুক বা জিতুক, ভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে থাকবে বিজেপি। ঠিক যেমনটা শুরুর প্রথম ৪০ বছরে কংগ্রেসের অবস্থা ছিল। সেদিকেই এগোচ্ছে বিজেপি। যখন জাতীয়স্তরে কেউ ৩০ শতাংশ ভোট পায়, তখন বুঝতে হবে সে তাড়াতাড়ি যাওয়ার নয়। কখনই এই ফাঁদে পা দেওয়া উচিত নয় যে মানুষ মোদীর উপর ক্ষুব্ধ এবং তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। হয়তো মোদী হেরে যাবেন কিন্তু বিজেপি কোথাও যাচ্ছে না। এখনও কয়েক দশক লড়তে হবে।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটের পক্ষে বার্তা দিলেও প্রশান্ত কিশোরের বক্তব্য, ‘রাহুল গান্ধী মনে করেন জনতা খুব শীঘ্রই নরেন্দ্র মোদীকে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়। যতক্ষণ না আপনি ওঁর ক্ষমতা বুঝতে পারবেন এবং তা প্রতিরোধ করতে পারবেন, ততক্ষণ আপনি ওঁকে হারাতে পারবেন না।’ অর্থাৎ কংগ্রেস যেভাবে এগোচ্ছে এবং রাহুল গান্ধীর ধারণা যে ঠিক নয় সেই কথাই বলতে চেয়েছেন প্রশান্ত।