আরবসাগরের তীরবর্তী রাজ্যে পা রেখেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, গোয়েনঞ্চি নভি সকাল। অর্থাৎ গোয়ায় নতুন সকালের উদ্ভব হবে। আজ শুক্রবার গোয়া থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিএমসি আর এখন শুধু তৃণমূল কংগ্রেস নয়। টিএমসি’র অর্থ হল টেম্পল–মস্ক–চার্চ’। অর্থাৎ মন্দির, মসজিদ এবং গির্জার মেলবন্ধনই হল টিএমসি। এই ভাষাতেই ভারতের সম্প্রীতি, ধর্মীয় ঐক্যের বার্তা দিলেন তিনি। সঙ্গে তাঁর আর্জি, ‘তৃণমূল মরে যাবে কিন্তু আপস করবে না। তৃণমূলকে একটা সুযোগ দিন। আমরা নতুন সকাল আনব।’
কিন্তু গোয়া নিয়ে কী পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রীর? শুক্রবার গোয়ায় তাঁর প্রথম রাজনৈতিক সভা থেকে তিনি বলেন, ‘গোয়ায় কর্মসংস্থানের অভাব বাড়ছে। নারীদের উপর অত্যাচার ২৪ শতাংশ বেড়েছে। আমরা নারীদের উন্নয়ন করব। তরুণদের উন্নয়ন করব। আমাদের দল থেকে পার্লামেন্টে ৪১ শতাংশ মহিলা প্রতিনিধি রয়েছে। আমরা নারী ও তরুণদের গুরুত্ব দেব। আমি দুর্গাপুজো করি, গণেশ চতুর্থীও পালন করি। আবার রমজানেও থাকি। ২৪ ডিসেম্বর রাতে চার্চে গিয়ে প্রার্থনাও করি। তৃণমূল কংগ্রেস বিভেদের রাজনীতি করে না। যারা করে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে না।’
এই রাজ্যের প্রথম সভা করে মমতা বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত মেয়েদের কন্যাশ্রী দেওয়া হয়। সাইকেল দেওয়া হয়। দ্বাদশ শ্রেণিতে ট্যাব দেওয়া হয়। বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার শুরু হয়েছে।’ এই মঞ্চ থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসকে সম্প্রীতি এবং ধর্মনিরপেক্ষতার মুখ হিসেবে তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তিনি সওয়াল করেন, ‘আমি আপনাদের সংস্কৃতিকে ভালবাসি। আমি উন্নয়নের জন্য এখানে এসেছি। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে গোয়ার তিনটে মিল রয়েছে। ফিস–ফুটবল–ফোক কালচার। আমি শক্তিশালী গোয়া দেখতে চাই।’
শুক্রবার সকালেই পানাজিতে গোয়ার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে সভা করেন তিনি। সেখানে মমতা বলেন, ‘আমি বহিরাগত নই। আমি আপনাদের বোনের মতো। আমি বাংলার মেয়ে, ভারতের মেয়ে। ভারত আমার মাতৃভূমি। বাংলাও আমার মাতৃভূমি, গোয়াও আমার মাতৃভূমি। আমি প্রথম এখানে আসছি না। ১০ বছর আগে এখানে এসেছিলাম ফিল্ম ফেস্টিভালে। রেলমন্ত্রী হিসেবে এখানে এসেছি। আমি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হতে আসিনি। গোয়ার উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার পর করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান মানুষজন।