বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে 'খাবার পরিবেশনের সময় তাতে থুতু মিশিয়ে দেওয়ার ঘটনা' বন্ধ করতে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
স্থির করা হয়েছে, খাবার যাতে সম্পূর্ণ পরিচ্ছন্নভাবে পরিবেশন করা হয়, তার জন্যই এবার জোড়া অধ্যাদেশ আনবে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সেই দু'টি অধ্যাদেশ হল যথাক্রমে - 'প্রিভেনশন অফ সিউডো অ্যান্ড অ্যান্টি-হার্মোনি অ্যাক্টিভিটিস অ্য়ান্ড প্রোহিবিশন অফ স্পিটিং অর্ডিন্যান্স ২০২৪' এবং 'ইউপি প্রিভেনশন অফ কন্টামিনেশন ইন ফুড (উভোক্তার তথ্য জানার অধিকার) অর্ডিন্যান্স ২০২৪'।
এই বিষয়ে আলোচনার জন্য আজই, অর্থাৎ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর, ২০২৪) সন্ধে সাড়ে ছ'টায় বৈঠকে বসবেন যোগী আদিত্যনাথ। সেই বৈঠকে থাকবেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব দীপক কুমার, স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিনিধি আশিস সিং, সঞ্জয় গুপ্তা (স্বরাষ্ট্র সচিব ডিজিপি)-সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরের আমলা ও আধিকারিকরা।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য হল, জোড়া অধ্য়াদেশ জারি করে সরকার পক্ষ সেই সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোরতম পদক্ষেপ করবে, যাঁরা থুতু মিশিয়ে খাবার পরিবেশন করেন! একইসঙ্গে, এই অধ্যাদেশ সমস্ত ক্রেতাকে সেই অধিকার দেবে, যার মাধ্যমে ক্রেতারা তাঁদের খাবার সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। যেমন- সেই খাবার কোথায় প্রস্তুত করা হয়েছে, কে সেই খাবার প্রস্তুত করেছেন ইত্য়াদি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি যোগী আদিত্যনাথের সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, সমস্ত দোকানদার ও ব্যবসায়ী, যাঁরা খাবার বিক্রি করেন, তাঁদের দোকানের সামনেই নিজেদের নাম লিখে রাখতে হবে।
সরকারের দাবি ছিল, যাতে ফলের রসে প্রস্রাব এবং রুটিতে থুতু না মেশোনা থাকে, তা নিশ্চিত করতেই নাকি এই নির্দেশিকা জারি করা হয়। কারণ, উত্তরপ্রদেশের নানা জায়গায় নাকি এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার গোরক্ষনাথ মন্দিরে আয়োজিত একটি 'জনতার দরবার'-এ অংশগ্রহণ করেন যোগী আদিত্যনাথ। সেই দরবারে আমজনতার অভাব অভিযোগ শোনেন তিনি। আর তারপরই খাবারে যাতে থুতু মেশানোর ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন।
সূত্রের দাবি, সরকারের কাছে নাকি এমন অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে, যেগুলিতে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার থুতু মিশিয়ে খাবার পরিবেশন করা হয়।
প্রসঙ্গত, শীঘ্রই উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট আসনগুলি হল - ফুলপুর, খাইর, গাজিয়াবাদ, মাঝওয়ান, মীরাপুর, মিলকিপুর, কার্নাল, কাটেহরি, কুন্দার্কি এবং সিসামউ।
শীঘ্রই এই কেন্দ্রগুলিতে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। তার ঠিক আগেই রাজ্য সরকারের জোড়া অধ্যাদেশ জারি সিদ্ধান্তের পিছনে সেই পুরোনো মেরুকরণের রাজনীতিরই গন্ধ পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।