এতদিন কয়লা উত্তোলনে একচেটিয়া অধিকার ছিল সরকারের। এবার সেই নিয়মে পরিবর্তন করল কেন্দ্র। জানানো হল, বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বাণিজ্যিক উত্তোলনের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ কয়লা খননের জন্য বেসরকারি ক্ষেত্রের দরজা খুলে দেওয়া হল।
‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের চতুর্থ দিনের শুরুতেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কাঠামোগত সংস্কার করা আবশ্যিক। ফলস্বরূপ বাড়বে বিনিয়োগ। আর সেই কাঠামোগত সংস্কারের প্রথম ধাপ হিসেবে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘আমরা কয়লা ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক উত্তোলন চালু করছি। কয়লায় সরকারের একচেটিয়া অধিকার ছিল। তা এখন প্রত্যাহার করা হচ্ছে। রেভিনিউ শেয়ারের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক কয়লা উত্তোলনের ফলে বেশি পরিমাণ কয়লা মিলবে এবং বাজারদরে বেশি কয়লা পাওয়া যাবে।’
সীতারামন জানান, ভারতে প্রচুর পরিমাণ কয়লা রয়েছে। গচ্ছিত কয়লার নিরিখে বিশ্বে ভারত তৃতীয় স্থানে আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করতে হয়। সেজন্য বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির জোগান নিয়ে সমস্যা হয়। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের সুযোগের ফলে অর্থনীতি লাভবান হবে।’ সেজন্য কয়লা উৎপাদনে স্বনির্ভর লক্ষ্যে এগোনো হচ্ছে। তবে কয়লার ফলে যে পরিবেশের যে প্রভাব পড়ে, সেই বিষয়টিও মাথায় রেখে কয়লাকে গ্যাসে পরিণত করার ক্ষেত্রে বিশেষ ইনসেনটিভ দেওয়া হবে বলে জানান সীতারামন।
একইসঙ্গে নিলাম করা হবে ৫০ টি কয়লা ব্লক। অর্থমন্ত্রী জানান, সেই ব্লকগুলি এখন কোল ইন্ডিয়ার হাতে আছে। তবে তা ব্যবহার করা হয়নি। কোল বেসড মিথেন (সিবিএম) উত্তোলনের ক্ষেত্রে নিলামের অধিকারও নিলাম করা হবে। পাশাপাশি উত্তোলন সংক্রান্ত পরিকাঠামোর জন্য ৫০,০০০ কোটি বরাদ্দ করবে কেন্দ্র। সীতারামনের দাবি, ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে শুধু সরকারি ব্লক থেকে এক বিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা পূরণ হবে।
পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলির (ডিসকম) দরজা বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য খুলে দেওয়ার ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে পরিষেবার মান উন্নত হবে, বিদ্যুৎ সরবরাহে প্রক্রিয়াগত এবং আর্থিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। পরে হিন্দিতে ব্যাখ্যার সময় অর্থ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানান, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে গ্রাহকের কম বিদ্যুতের মাসুল গুনতে হবে। কারেন্ট অফ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে জরিমানার মুখেও পড়তে হবে। তবে শুধু কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে নয়, পরবর্তীতে বিনিয়োগ টানতে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে দক্ষতা বাড়ানোর মডেল হিসেবে দেশের বাকি রাজ্যগুলিতেও প্রয়োগ করার সম্ভাবনা রয়েছে।