এক সপ্তাহের মধ্যে জোড়া সাফল্য! রাজধানী দিল্লিতে একের পর এক অভিযানে সব মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হল ৭,৫০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের কোকেন!
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার দিল্লির রমেশ নগর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ২০০ কিলোগ্রাম কোকেন! যার আনুমানিক বাজার দর ২,০০০ কোটি টাকা।
সূত্রের দাবি, রীতিমতো বলিউডি সিনেমার কায়দায় মাদক পাচারকারীর অবস্থান চিহ্নিত করে এই বিপুল পরিমাণ কোকেন বাজেয়াপ্ত করতে সমর্থ হয়েছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, প্রথমেই পুলিশ এক মাদক কারবারিকে চিহ্নিত করে। তারপর জিপিএস লোকেশন ট্র্যাক করে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। দেখা যায়, ওই ব্যক্তি পশ্চিম দিল্লির রমেশ নগরে রয়েছে। এরপরই তাকে পাকড়াও করতে অভিযানে নামে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল।
তবে, এত কিছু করেও অভিযুক্তকে ধরা সম্ভব হয়নি। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, ওই ব্যক্তি লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, তার কাছে থাকা বিপুল পরিমাণ মাদক দিল্লি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করতে পেরেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রায় ৫,৬০০ কোটি টাকার কোকেন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, সেই একই চক্রের সন্ধান করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার আরও প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৬২ কিলোগ্রাম কোকেন বাজেয়াপ্ত করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। যার সামগ্রিক বাজারদর প্রায় ৭,৬০০ কোটি টাকা। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই এই সাফল্য এসেছে। যা সারা দেশে নয়া রেকর্ড বলেও দাবি করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গতবার উদ্ধার হওয়া কোকেনের পরিমাণ ছিল ৫০০ কিলোগ্রামেরও বেশি। সূত্রের দাবি, এর আগে রাজধানী দিল্লি থেকে একসঙ্গে এত বিপুল পরিমাণে কোকেন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি।
এই গোটা ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দক্ষিণ দিল্লিতে একটি অভিযানের পর তাদের পাকড়াও করা হয়।
ধৃতদের মধ্যে অন্যতম হল, জিতেন্দ্র পাল সিং ওরফে জাস্সি। তাকে পঞ্জাবের অমৃতসরের বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ব্যক্তি ব্রিটেনে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষলেও পুলিশের তৎপরতায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে কোনও সংগঠিত ও আন্তর্জাতিক মাদক পাচারচক্র। যাদের নেটওয়ার্ক সারা ভারতে এবং ব্রিটেনে ছড়িয়ে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে জিতেন্দ্র সম্পর্কে তথ্য আসে। জানা যায়, গত ১৭ বছর ধরে ব্রিটেনে বসবাস করছে সে। বর্তমানে সে সেদেশের স্থায়ী বাসিন্দা।
তদন্তকারীদের অনুমান, ভারতের মধ্যে মূলত দিল্লি ও মুম্বইয়ে এই মাদক চক্রের নেটওয়ার্ক রয়েছে। সেইসঙ্গে, দুবাই যোগেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে আরও এক ভারতীয় নাগরিকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বীরেন্দ্র বাসোয়া নামে ওই ব্যক্তি খুব সম্ভবত পশ্চিম এশিয়ার কোনও দেশের বাসিন্দা। তার সম্পর্কে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে তার সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে।