বিষাক্ত কাশির সিরাপ কোল্ডরিফের প্রস্তুতকারক সংস্থা শ্রীসান ফার্মার লাইসেন্স বাতিল করেছে তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক বিবৃতিতে বলেছে, 'শ্রীসান ফার্মার ওষুধ তৈরির লাইসেন্স পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে এবং সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।' উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশে ২২ জন শিশু কাশির সিরাপ খেয়ে প্রাণ হারানো পর গত ৫ অক্টোবর তামিলনাড়ু সরকার শ্রীসান ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাকে একটি নোটিশ জারি করেছল। কারণ দর্শানোর সেই নোটিশে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন তাদের ওষুধের লাইসেন্স সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হবে না।
এদিকে সোমবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট শ্রীসান ফার্মার সঙ্গে যুক্ত ৭টি জায়গায় অভিযান চালায়। প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও রাজস্থানেও এই সিরাপে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের বেশিরভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সি। মৃত শিশুরা ছিন্দওয়াড়া, পান্ধুরনা ও বেতুল জেলার বাসিন্দা। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পুদুচেরি ও ওড়িশায় এই সিরাপ সরবরাহ করত সংস্থাটি। তামিলনাড়ু সরকার এই রাজ্যগুলিকে সিরাপ বিক্রি বন্ধ করার জন্য একটি পরামর্শ জারি করেছে। কোল্ডরিফ সিরাপ পান করার পর শিশুদের কিডনিতে সংক্রমণ হয়।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে তামিলনাড়ু কর্তৃপক্ষ এই কোল্ডরিফ সিরাপের নমুনায় বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক পদার্থ ডাইথিলিন গ্লাইকোল পায়। এরপরই সিরাপটিকে ভেজাল বলে ঘোষণা করেছিল। এই ঘটনায় শ্রীসান ফার্মার মালিক রঙ্গনাথনকে গ্রেফতার করে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। তাকে ছিন্দওয়ারায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রবীণ সোনি নামের এক চিকিৎসককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বেশিরভাগ শিশুকে এই সিরাপ খাওয়ার জন্য প্রেস্ক্রিপশনে লিখেছিলেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার আরও দুটি ব্র্যান্ড - রিলিফ (শেপ ফার্মা) এবং রেসপিফ্রেশ (রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস) নিষিদ্ধ করেছে সম্প্রতি। জানা গিয়েছে, কোল্ডরিফে ডাইথিলিন গ্লাইকোলের মাত্রা অনেক বেশি ছিল। এর জেরেই শিশুদের মৃত্যু হয়। এই আবহে গুজরাটে তৈরি হওয়া রেসপিফ্রেশ টিআর এবং রিলাইফ কাশি সিরাপের ব্যাচও নিষিদ্ধ করা হয়। তাতেও ডাইথিলিন গ্লাইকোল বেশি আছে বলে জানা যায়। রেসপিফ্রেশ টিআর ওষুধটি বানায় আমেদাবাদ জেলায় অবস্থিত রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস, রিলাইফ তৈরি করে শেখপুরের শেপ ফার্মা।