দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসে এক দল চাষী যেরকম দক্ষযজ্ঞ করল, তারপর শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর। লাল কেল্লায় উঠে চাষীদের তাণ্ডবলীলার জন্য কে দায়ী, সেই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে একে অপরকে দোষ দেওয়া। এই ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফা দাবি করেছে কংগ্রেস। অন্যদিকে রাহুল গান্ধীকে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখার জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছে বিজেপি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন যে কংগ্রেস দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায় ও তারাই চাষীদের খেপাচ্ছে। জাভড়েকর বলেন যে আইনগুলিতে ১৮ মাসের জন্য হিমঘরে পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, দফায় দফায় আলোচনা চলছে, কিন্তু সমস্যার সমাধান চায় না কংগ্রেস। জাভড়েকর বলেন যে চাষীদের বিকল্প দেওয়ার জন্য এই আইনগুলি। কিন্তু যারা ভোটে হেরেছে তারা দেশের পরিবেশ নষ্ট করে দিতে চাইছে। কেন কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাব ছাড়া বাকি রাজ্যে চাষীরা আন্দোলন করছে না, সেই প্রশ্ন করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন ভোটে হারার পর বাংলায় একজোট হচ্ছে কংগ্রেস ও বাম। তারা শুধু হিংসা ছড়াতে চায় যাতে পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি চালায় ও প্রাণহানি হয়। কংগ্রেস উস্কানির রাজনীতি করছে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। দিল্লি পুলিশকে তলোয়ার, লাঠি ও পাথর দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। তারপরেও যেরকম ধৈর্য তারা দেখিয়েছেন, সংযম প্রদর্শন করেছে সেটাকে কুর্নিশ করেন তিনি। রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেসের ক্ষমা চাওয়া উচিত কারণ এমন নেতিবাচক রাজনীতি দেশের স্বার্থবিরোধী বলে মনে করেন জাভড়েকর।
অন্যদিকে পুরো হিংসার দায় বিজেপির ওপর চাপাচ্ছে কংগ্রেস। প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন যে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে একটি ষড়যন্ত্র হয়েছে চাষী আন্দোলনকে বদনাম করার জন্য। সংযুক্ত কিষান মোর্চার সঙ্গে যুক্ত নেই এমন লোকদের লাল কেল্লার গর্ভগৃহে ঢুকতে দেওয়া হয়। তারা সেখানে পতাকা উত্তোলন করে যেটা মেনে নেওয়া যায় না। দীপ সিধু ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে মোদী ও শাহের পূর্ব পরিচিয় ছিল, সেই কথাও মনে করিয়ে দেন কংগ্রেস মুখপাত্র। কেন এই সব দাঙ্গাকারীদের গ্রেফতার করা হল না, সেই প্রশ্নও করেন তিনি।
সুরজেওয়ালা বলেন এই নিয়ে এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বার দিল্লিতে অনিয়ন্ত্রিত হিংসা হল যেখানে পুলিশের দায়িত্বে অমিত শাহ। এটি ইনটেলিজেন্সের ব্যর্থতা বলে তিনি দাবি করেন। ৫০০-৭০০ বিক্ষোভকারী লাল কেল্লা দখল করে নিল ও পুলিশ কীভাবে চুপচাপ সেটা দেখল, সেই প্রশ্ন করেন সুরজেওয়ালা। কংগ্রেস নেতার দাবি যে ৭৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্বল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই কারণে তাঁকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া উচিত মোদীর বলে দাবি করেন সুরজেওয়ালা। তিনি বলেন মোদী যদি শাহকে বরখাস্ত না করেন, তাহলে এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে চাষীদের বদনাম করার ষড়যন্ত্রে প্রধানমন্ত্রীও শরিক।