শনিবার সকাল থেকেই শোনা যাচ্ছিল কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছে পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন অমরিন্দর সিং। এরপরই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন। এর আগেই অবশ্য ক্যাপ্টেনকে সরানোর পরিকল্পনার শেষ অধ্যায় লেখা হয়ে গিয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক অজয় মাকেন ৬০ জন বিধায়কের সই সমেত এক চিঠি নিয়ে কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীর কাছে পৌঁছে যান, যাতে লেখা ছিল বিধায়করা ক্যাপ্টেনকে সমর্থন করেন না।
এদিকে ক্যাপ্টেনের পতন নিশ্চিত হতেই দিল্লিতে মাকেনকে রাহুল নির্দেশ দেন সম্ভাব্য আইনি জটিলতা নিয়ে অভিষেক মনু সিংভির সঙ্গে কথা বলতে। কারণ কংগ্রেস হাইকমান্ডের ভয় ছিল, মুখ্যমন্ত্রিত্ব খুইয়ে বিধানসভা 'ডিসলভ' করার কথা ভাবতে পারেন অমরিন্দর। তবে সেই পথে অবশ্য অমরিন্দর হাঁটেননি। উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১০ বছর পর ২০১৭ সালে কংগ্রেসকে পঞ্জাবে ফিরিয়ে এনেছিলেন এই অমরিন্দরই। তবে সেই অমরিন্দরই নিজের জদলের অন্দরে সমর্থন হারান। অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরই আবার মত, কংগ্রেস হাইকমান্ডের নির্দেশেই বিধায়করা অমরিন্দরকে সরানোর পক্ষে সায় দেন। কারণ কংগ্রেসের মতো জাতীয় দলে কেন্দ্রীয় স্তর থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কে নির্বাচনে লড়বেন, কে লড়বেন না। তাই নির্বাচনের একবছর আগে হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করার প্রশ্নই ওঠে না।
সূত্রের দাবি, নতুন কোনও নেতাকে ভোটের আগে পঞ্জাবের মসনদে বসাতে চায় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর সেটা আঁচ করেই আগেই পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করেন অমরিন্দর সিং। এপর সটান রাজভবন গিয়ে পদত্যাগ। শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ক্যাপ্টেন বলেন, 'আমি অপমানিত বোধ করেছি। আমি আজ সকালে কংগ্রেসের সভানেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জানিয়েছিলাম, আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাই।'
উল্লেখ্য, পঞ্জাব কংগ্রেসে বেশ কিছুদিন ধরেই গোলমাল চলছিল। আগামী বছর সেখানে বিধানসভা নির্বাচন। তবে নির্বাচনের প্রাক্কালে অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে সিধুর সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে অস্বস্তিতে পড়েছিল দলের হাইকমান্ড। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অন্তর্দন্দ্বে জর্জরিত ছিল পঞ্জাব কংগ্রেস। নির্বাচনের আগে এই অন্তর্কলহ স্বাভাবিকভাবে রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধীদের চিন্তিত করছিল। এই পরিস্থিতিতে সমস্যা মেটাতে পঞ্জাবের প্রদেশ সভাপতি পরিবর্তন করে কংগ্রেস। দায়িত্ব দেওয়া নভজ্যোত সিং সিধুকে। তারপরেও ক্ষোভ কমেনি অমরিন্দরের বিরুদ্ধে। অমরিন্দর সিংকে সরাতে সিধুর অনুগামীরা কোমর বেঁধে নামেন বলে অভিযোগ। তাতে কতকটা সায় ছিল হাইকমান্ডেরও অবশেষে, গতকাল মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন অমরিন্দর সিং। শোনা যাচ্ছে, তাঁর জায়গায় খুব সম্ভবত পঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি সুনীল জাখর।