'পেট্রল, ডিজেল তৈরি রাখুন। নির্দেশ পেলেই সবকিছু জ্বালিয়ে দেবেন।' এক নাবালিকার মৃত্যুর প্রতিবাদে ডাকা বনধ চলাকালীন এমনই নির্দেশ দিতে শোনা গেল ওড়িশার প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ মাঝিকে। তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
গত ১৩ ডিসেম্বর রাত থেকে ওড়িশার নবরংপুর জেলার ১৬ বছরের এক দলিত কিশোরীর খোঁজ মিলছিল না। পরদিন সকালে ধানখেতে উদ্ধার হয় কিশোরীর রক্তাক্ত দেহ। তাঁকে গণধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ ওঠে। এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে গতকাল নবরংপুরে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দেন প্রদীপ। সকাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু করেন তিনি। নির্যাতিতার পরিবারকে ২০ লাখ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তোলেন। সেই সময় তাঁকে বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করে পুলিশ। তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় প্রদীপের। ইতিমধ্যে দলের এক কর্মীকে ফোনে ধরেন নবরংপুরের প্রাক্তন সাংসদ। পেট্রল ও ডিজেল তৈরি রাখার নির্দেশ দেন তিনি। সেই কথোপকথনের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এরইমধ্যে একটি আম্বেদকর চকে একটি অব্যবহৃত গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
নবরংপুরের পুলিশ সুপার জানান, হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ায় কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সুপার বলেন, 'তদন্ত চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজু জনতা দলও। নবরংপুরের বিজেডি সাংসদ রমেশ মাঝি বলেন, 'যদি একজন জনপ্রতিনিধি নিজের দলের কর্মীদের হিংসা ছড়ানোর জন্য প্ররোচনা দেন, তা মানুষ ভালোভাবে নেবে না। তিনি (প্রদীপ) জঙ্গিদের মতো কথা বলছেন। মনে হচ্ছে, মে'তে লোকসভা নির্বাচনে হারের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।'
যদিও নিজের মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত নন কংগ্রেস নেতা। তাঁর বক্তব্য, 'আমি আর গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি না। বিজেডির শাসনে মহিলা ও কন্যাসন্তানরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। আমি চুপ করে বসে থাকতে পারি না। প্রথমে কুণ্ডুলী থেকে এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ করেছিল জওয়ানরা। এখন নবরংপুরে আরও এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। ১৩ দিন কেটে গেলেও কিশোরীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। স্বরাষ্ট্র দফতর, সরকার ও চিকিৎসকরা কী করেছেন? আপনারা কী আশা করেন, এরপরও আমি হাত গুটিয়ে বসে থাকব!'