আয়কর দফতরের একাধিক দল বিবিসির দিল্লি ও মুম্বই অফিসে পৌঁছেছে কিছুক্ষণ আগেই। আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা বিবিসির কর্মীদের ফোন বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে রিপোর্টে। গণমাধ্যমের সঙ্গেও বিবিসি কর্মীদের কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে আয়কর দফতর দিল্লি ও মুম্বইয়ের অফিসে 'সার্ভে' ও তল্লাশি চালাচ্ছে আয়কর আধিকারিকরা। এই নিয়ে এবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিল কংগ্রেস। বর্তমানে এ বিষয়ে বিবিসির কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও কংগ্রেস এই 'সার্ভে' নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। কংগ্রেস বলছে, এই পদক্ষেপেই বোঝা যাচ্ছে দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। কংগ্রেস বলেছে যে আগে বিবিসি ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং এখন সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। এটি একটি অঘোষিত জরুরি অবস্থা।
সরকারকে আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, 'বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি' দেখাচ্ছে বিজেপি। জয়রাম রমেশ বলেছিলেন যে এই অভিযানই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে। তিনি বলেন, একদিকে আমরা আদানির মামলায় যুগ্ম সংসদীয় কমিটির দাবি করছি। অন্যদিকে সরকার শুধু একটি তথ্যচিত্রের জন্য বিবিসি অফিসে অভিযান চালিয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আয়কর দফতরের দলগুলি দিল্লি ও মুম্বই সহ মোট ২২টি জায়গায় বিবিসি অফিসে পৌঁছেছে এবং তল্লাশি চালাচ্ছে। এদিকে বিবিসির অফিসে আয়কর দফতরের দল পৌঁছানোর 'সময়' নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ সকালেই বিবিসি ডকুমেন্টারির ইস্যুতে এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, 'এই লোকেরা ২০০২ সাল থেকে মোদীজির পিছনে পড়ে রয়েছে।'
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গাতে নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র সম্প্রতি প্রকাশ করেছিল বিবিসি। যা নিয়ে সমালোচনা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকও ব্রিটিশ সংসদে দাঁড়িয়ে বিবিসির তথ্যচিত্রের বিরুদ্ধ মত পোষণ করেন। এই বিতর্কের মাঝেই এবার বিবিসির অফিসে কেন্দ্রীয় সংস্থার হানা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিতর্কিত তথ্যচিত্র ঘিরে বিবিসি বহুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। সেই জায়গা থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে এই তথ্যচিত্র ব্লক করার কেন্দ্রীয় নির্দেশের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এদিকে মামলা দায়ের হয়েছিল ভারতে বিবিসির কার্যক্রম বন্ধের আর্জি জানিয়েও। ‘ইন্ডিয়া দ্যা মোদী কেয়েশ্চন’ শীর্ষক ওই বিতর্কিত তথ্যচিত্র ভারতে দেখায়নি বিবিসি। তবে তা ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছিল। তবে ভারত সরকার সেই তথ্যচিত্রটি ‘ব্লক’ করে দিয়েছিল। এদিকে গতকাল সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, ২০০২ সালের পর থেকেই মোদীর পিছনে পড়ে রয়েছে বিবিসি।